বাংলাদেশ, জেলার সংবাদ

'এটি এক্সপ্রেসওয়েতে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা'

ডেস্ক প্রতিবেদন

ডিবিসি নিউজ

রবিবার ১৯শে মার্চ ২০২৩ ০৫:৩৫:২৫ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

‘পদ্মা সেতুর এক্সপ্রেসওয়েতে কম–বেশি দুর্ঘটনা ঘটছে। তবে মহাসড়কের রেলিং ভেঙে বাস খাদে পড়ে এত প্রাণহানির ঘটনা আগে ঘটেনি। এটি এক্সপ্রেসওয়েতে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা।’ কথাগুলো বলেছেন দুর্ঘটনার পর স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে উদ্ধারকাজে অংশ নেওয়া কুতুবপুর এলাকার হায়দার আলী।

হাইওয়ে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ ভোর ৪টার দিকে খুলনার ফুলতলা থেকে বাসটি ছাড়ে। পরে ভোর ৫টা ৫ মিনিটে খুলনার সোনাডাঙ্গা থেকে যাত্রী নিয়ে ঢাকার দিকে রওনা হয়। বাসটির চালক সকাল সাড়ে ৭টার দিকে পদ্মা সেতুর আগে এক্সপ্রেসওয়ের কুতুবপুর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারান। বাসটি রেলিং ভেঙে খাদে পড়ে যায়। এতে বাসটি দুমড়েমুচড়ে যায়। সকাল ৯টা পর্যন্ত ১৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
 
স্থানীয় উদ্ধারকর্মীরা বলছেন, বাসটি ভরা যাত্রী ছিলেন। সড়ক থেকে বাসটি পড়ার সময় ডিগবাজি খায়। এ কারণে এত প্রাণহানি।
 
উদ্ধারকর্মী চন্দন রায় বলেন, এক্সপ্রেসওয়েতে এর আগেও বাস, প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস দুর্ঘটনায় পড়েছে। কিন্তু এবারই প্রথম বাস খাদে পড়ে ১৬ জন মারা গেছেন। এক্সপ্রেসওয়েতে চালকেরা অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালান, যা এখানে দুর্ঘটনার প্রধান কারণ।

ভয়াবহ দুর্ঘটনা থেকে নতুন জীবন পাওয়া ইমাদ পরিবহনের যাত্রী ২৫ বছরের আনোয়ারা বেগম কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে বলছিলেন, 'এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়িটি বেশ দ্রুতগতিতে চলছিল। হঠাৎ কী যে হলো, বুঝে উঠতে পারছিলাম না। মনে হলো মাথায় আসমান ভেঙে পড়তাছে। শুধু ছেলেকে বুকে জড়িয়ে রেখে আল্লাকে ডাকছিলাম। মুহূর্তের মধ্যেই সব ঘটে গেল।'

আনোয়ারা বেগম এবং তার শিশু সাজ্জাদকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করেছে উদ্ধারকর্মীরা। উদ্ধারের পর অনেকটা ঘোরের মধ্যে ছিলেন আনোয়ারা। কিছুক্ষণ পর ঘটনার ভয়াবহতা দেখে আঁতকে উঠলেন এবং সন্তানকে জড়িয়ে ধরলেন। এ সময় বার বার আল্লাহকে ডাকছেন এবং আল্লাহর নিকট শুকরিয়া জানাচ্ছেন তিনি। ভয়াবহ দুর্ঘটনা থেকে জীবন পাওয়া আনোয়ারা বেগম বাগেরহাটের গারফা গ্রামের তাহিম মোল্লার স্ত্রী।

শিবচর হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু নাঈম মো. মোফাজ্জেল হক বলেন, দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৭ জন মারা গেছেন। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে কাজ চলছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অতিরিক্ত গতির কারণে বাসটির চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে সেটি খাদে পড়ে যায়।'

এদিকে, আহতদের আহাজারিতে চারপাশ প্রকম্পিত। চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের।

 

আরও পড়ুন: এক্সপ্রেসওয়েতে যাত্রীবাহী বাস খাদে, দুই নারীসহ নিহত বেড়ে ১৬

 

প্রসঙ্গত, রবিবার সকাল ৮ টার দিকে শিবচরের এক্সপ্রেসওয়ের কুতুবপুর এলাকার ঢাকাগামী লেনে ‘ইমাদ’ পরিবহনের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রেলিং ভেঙে উল্টে নিচে পড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই ১৪ জনের প্রাণহানি ঘটে। হাসপাতালে মারা যান আরও ২ জন। আহতের সংখ্যা ৩০ ছাড়িয়ে গেছে। দুর্ঘটনার পর হাইওয়ে পুলিশ, শিবচর থানা পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিসের টিম উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেন।

আরও পড়ুন