বাংলাদেশসহ ৩৩টি দেশ থেকে সিজনাল ও নন-সিজনাল ভিসায় প্রায় ৮৩ হাজার কর্মী নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইউরোপের অন্যতম অর্থনৈতিক শক্তিশালী দেশ ইতালি।
সম্প্রতি দেশটির মন্ত্রীপরিষদের একটি আলোচনা সভায় এ বিষয়ে স্বাক্ষরিত এক স্মারকের বরাত দিয়ে দেশটির মন্ত্রীপরিষদ সচিব ‘আলফ্রেদো মানতোভানো’ এ তথ্য জানিয়েছেন। তবে আবেদন প্রক্রিয়ার বিস্তারিত জানার জন্য চূড়ান্ত খসড়া বা গেজেট বের হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
জানা গেছে, মহামারী করোনাভাইরাসের পর থেকে দেশটির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খাতে পর্যাপ্ত লোকবলের অভাব রয়েছে। সেইসাথে ভূমধ্যসাগরসহ অন্যান্য অবৈধ পথে ইতালিতে প্রবেশ বন্ধ করতে এ বছর ৮২ হাজার ৭০৫ জন নন-ইউরোপিয়ান নাগরিককে বৈধপথে দেশটিতে প্রবেশ করে কাজের সুযোগ দেয়া হবে।
এর মধ্যে অস্থায়ী বা সিজনাল ভিসায় দেশটিতে প্রবেশের সুযোগ পাবে ৪৪ হাজার এবং স্থায়ী বা নন-সিজনাল ভিসায় দেশটিতে প্রবেশ করতে পারবে ৩৮ হাজার ৭০৫ জন নন-ইউরোপিয়ান নাগরিক। তবে স্থায়ী বা নন-সিজনাল ভিসায় বাংলাদেশসহ ৩৩টি দেশ থেকে সর্বোচ্চ ২৪ হাজার ১০৫ জন দেশটিতে বৈধভাবে প্রবেশ করতে পারবে।
সাধারণত কৃষিখাতে সবচেয়ে বেশী কর্মী প্রবেশের সুযোগ পাবে। এ ছাড়াও থাকবে ভারী যানবাহন চালানোর লাইসেন্সধারী, সিজনাল আবাসিক হোটেল ও রেস্টুরেন্ট, মেটাল মেকানিক্স, খাদ্য-দ্রব্য ও জাহাজ নির্মাণ শিল্পখাতে প্রবেশের সুযোগ। তবে বাংলাদেশের সঙ্গে ইতালির ড্রাইভিং লাইসেন্স করভার্ট চুক্তি না থাকায় এই সেক্টরে সরাসরি বাংলাদেশ থেকে আবেদনের সুযোগ থাকবে না। তবে যদি কোনও বাংলাদেশির অন্য কোনও দেশের ভারী যানবাহন চালানোর লাইসেন্স থাকে এবং সেই দেশের লাইসেন্স যদি ইতালিতে গ্রহণযোগ্য হয়, তাহলে এই সেক্টরে আবেদনের সুযোগ থাকবে।
তবে এ বছরের আবেদন প্রক্রিয়া বিগত বছরগুলোর তুলনায় একটু ব্যতিক্রম হবে বলে জানিয়েছেন আলফ্রেদো। এ বছর স্থানীয় সরকার লোকাল বা অভ্যন্তরীণ মার্কেটের দিকে বেশি গুরুত্ব দিবে বলে জানা গেছে। প্রথমাবস্থায় সরাসরি অন্যদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের আবেদন না করে প্রথমে দেশটিতে থাকা বৈধ কোনও কর্মী খুঁজতে হবে। এজন্য ওই মালিককে দেশটির সরকারী প্রতিষ্ঠানে ‘centro per l’impiego’ (যেখানে ইতালির সকল কর্মীদের তথ্য সংরক্ষণ করা থাকে) আবেদন করতে হবে। যদি ‘centro per l’impiego’ মালিকের চাহিদানুযায়ী কর্মী দিতে ব্যর্থ হয়, শুধুমাত্র তখনই ওই মালিক বিদেশ থেকে কর্মী পেতে আবেদন করতে পারবেন।
এ বিষয়ে দেশটিতে থাকা অভিবাসন বিষয়ে অভিজ্ঞরা বলছেন, ‘যদিও এবারের আবেদন প্রক্রিয়া একটু ক্রিটিকাল মনে হচ্ছে কিন্তু এর ভবিষ্যৎ ভালো হবে বলে মনে হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ায় দালালের দৌরাত্ম্য কমবে বলে আশা করা যায়।’