বাংলাদেশ, জেলার সংবাদ

সাংসদ ছোট মনির ভাই বড় মনিরের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা

স্টাফ রিপোর্টার, টাঙ্গাইল

ডিবিসি নিউজ

শুক্রবার ৭ই এপ্রিল ২০২৩ ০২:২৮:২৩ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের সংসদ ছোট মনিরের বড় ভাই গোলাম কিবরিয়া বড় মনিরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেছেন এক কিশোরী। বড় মনির টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিব।

বুধবার (৬ এপ্রিল) রাতে টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলায় গোলাম কিবরিয়ার স্ত্রী নিগার আফতাবকেও আসামি করা হয়েছে।  ধর্ষণের ফলে ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। 

মামলার এজাহারে ওই কিশোরী অভিযোগ করেন, বড় মনি তাদের আত্মীয় এবং পূর্ব পরিচিত।  হোয়াটস অ্যাপে তাদের কথা হতো।  ওই কিশোরীর ভাইয়ের সাথে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ হয়।  ওই কথা গোলাম কিবরিয়াকে জানানোর পর তিনি সমস্যা সমাধান করে দেওয়ার আশ্বাস দেন।  পরে গত ১৭ ডিসেম্বর শহরের আদালত পাড়ায় বড় মনির নিজের বাড়ির পাশে একটি ১০ তলা ভবনের চতুর্থ তলা ফ্লাটে যেতে বলেন।

 

সেখানে যাওয়ার পর শারিরীক সম্পর্ক করার প্রস্তাব দেন। রাজি না হওয়ায় তার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে তাকে একটি কক্ষে আটকে রাখেন। প্রায় তিন ঘন্টা পর কক্ষে প্রবেশ করে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ধর্ষণ শেষে কারো কাছে এই ঘটনা প্রকাশ করতে নিষেধ করেন। প্রকাশ করলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন। তারপর প্রতিনিয়ত তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে এবং প্রথমবার ধর্ষণের সময় তোলা ছবি দেখি প্রতিনিয়ত ধর্ষণ করতো। 

ধর্ষণের ফলে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। এ কথা গোলাম কিবরিয়াকে জানালে তাকে গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ ও হুমকি দিতে থাকেন। কিন্তু সন্তান নষ্ট করতে রাজি না হওয়ায় গত ২৯ মার্চ রাত ৮ টার দিকে গোলাম কিবরিয়া তার শ্বশুড়বাড়ির আদালত পাড়ায় তুলে নিয়ে যান। সেখানে গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। রাজি না হওয়ায় ওই বাসায় এক কক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখে।

 

পরে তাকে সেখানে আবার ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর গোলাম কিবরিয়ার স্ত্রী তাকে মারধর করেন। এতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে রাত ৩ টার দিকে বাসায় পৌঁছে দেন। এরপর থেকে তাকে নানা হুমকি দেয়া হতো। শারিরীক ও মানসিকভাবে অসুস্থ থাকার জন্য মামলা করতে বিলম্ব হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করেছেন।

টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেশকে জান্নাত রিপা ভিকটিমের ২২ ধারার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।


টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক  ডা. খন্দকার সাদিকুর রহমান বলেন, ওই কিশোরীর শরীরে প্রাথমিকভাবে কোন নির্যাতনের আলামত পাওয়া যায়নি। তার ভ্যাজানাইল সোয়াব সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে ওই কিশোরী গর্ভবতী। অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য গাইনী বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট লুৎফুন্নাহারকে প্রধান করে তিন সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। এই বোর্ড ওই কিশোরীর ডাক্তারী পরীক্ষা শেষে প্রতিবেদন পেশ করবেন।

টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হাবিবুর রহমানকে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ওই কিশোরীর ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল ও  জবানবন্দি লিপিবদ্ধের জন্য আদালতে পাঠানো হয়েছে।

মামলা প্রসঙ্গে গোলাম কিবরিয়া বড় মনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার ভাই টাঙ্গাইল-২ আসনের সংসদ সদস্য সে জন্য আমাদের প্রতিপক্ষরা রাজনৈতিকভাবে হেয় করতে ওই মেয়েকে দিয়ে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এই মামলা দায়ের করিয়েছে। ওই মেয়ে আমার স্ত্রীর স্বজন। সে মাদকসেবী হওয়ায় আমার স্ত্রী তাকে মৌখিক শাসন করেছে। ঘটনা সুষ্ঠু তদন্ত করলেই প্রকৃত সত্য বেড়িয়ে আসবে।

ডিবিসি/কেএমএল

আরও পড়ুন