অসাধারণ সৌন্দর্য, সহজাত অভিনয় দক্ষতা ও গ্ল্যামারস লুক, ব্যতিক্রমী বাচনভঙ্গি দিয়ে সাধারণ দর্শক থেকে শুরু করে সবার কাছেই আলাদা একটা জায়গা করে নিয়েছেন পূর্ণিমা। কঠোর পরিশ্রম, অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসা তাকে নন্দিত অভিনেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে ইন্ডাস্ট্রিতে। আজ দর্শকপ্রিয় চিত্রনায়িকা পূর্ণিমার জন্মদিন। তার জন্ম ১৯৮৪ সালের ১১ জুলাই।
নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় তার প্রথম সিনেমা মুক্তি পায়। সেটি ১৯৯৮ সালের ঘটনা। সেই বছরের ১৫ মে মুক্তি পাওয়া সিনেমাটি পরিচালনা করেন জাকির হোসেন রাজু। নাম ‘এ জীবন তোমার আমার’। ২৫ বছর আগের সেই সিনেমায় পূর্ণিমা দেখতে যেমন ছিলেন, দর্শকের মতে তিনি এখনও তেমনই আছেন। তার এই বয়স না বাড়া নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা কম হয়নি।
তার পারিবারিক নাম দিলারা হানিফ রিতা; কিন্তু পূর্ণিমা নামেই তিনি সবার কাছে পরিচিত।
মাঝের বেশ কিছু সময় চলচ্চিত্রে না থাকলেও ছোটপর্দায় তাকে পাওয়া গেছে নিয়মিত। কখনও উপস্থাপনায়, কখনও নাটকে। বর্তমানে সিনেমায় খুব একটা নিয়মিত নন তিনি। মুক্তির অপেক্ষায় ‘জ্যাম‘ ও ‘গাঙচিল’ নামের দু’টি সিনেমা রয়েছে। দু’টি সিনেমাই পরিচালনা করছেন নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামুল।
পূর্ণিমা অভিনীত প্রথম সফল সিনেমা ‘মনের মাঝে তুমি’। এটির পরিচালক মতিউর রহমান পানু। ২০০৩ সালে মুক্তি পাওয়া এই সিনেমার গানগুলোও খুব আলোচিত হয়েছিল। খ্যাতিমান পরিচালক চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত সাহিত্যনির্ভর সিনেমা ‘মেঘের পরে মেঘ’, ‘শাস্তি’ ও ‘সুভা’য় অভিনয় করেছেন পূর্ণিমা। ‘সুভা’ সিনেমাতে তার বিপরীতে ছিলেন শাকিব খান। সাহিত্যনির্ভর তিনটি সিনেমাতেই পূর্ণিমার অভিনয় প্রশংসিত হয়।
এসএ হক অলিক পরিচালিত ‘হৃদয়ের কথা’ সিনেমাটি মুক্তির পর আলোচিত হয়। সিনেমার গানগুলোও তুমুল জনপ্রিয়তা পায়। বিশেষ করে ‘বলে তো দিয়েছি হৃদয়ের কথা’ ও ‘ভালোবাসব বাসব রে বন্ধু’ গান দু’টি। এরপর এসএ হক অলিক পরিচালিত ‘আকাশ ছোঁয়া ভালোবাসা’ মুক্তি পায়। এই সিনেমা দু’টিতে তার বিপরীতে ছিলেন রিয়াজ। দু’জনে প্রায় ২৫টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন।
সিনেমাতে অভিনয়ের শুরুর সময়েই পূর্ণিমা রেজানুর রহমানের নির্দেশনায় শহীদুজ্জামান সেলিমের বিপরীতে একটি নাটকে অভিনয় করেছিলেন। সিনেমাতে তিনি রিয়াজ, মান্না, রুবেল, ফেরদৌস, আমিন খান, অমিত হাসান, শাকিব খানসহ আরও অনেকের বিপরীতে অভিনয় করেন।
ক্যারিয়ারে অসংখ্য ব্যবসাসফল সিনেমায় অভিনয় করেছেন পূর্ণিমা। তার উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে আরও রয়েছে- ‘নিশ্বাসে তুমি বিশ্বাসে তুমি’, ‘ শ্বশুর জামাই’, ‘টক ঝাল মিষ্টি’, ‘যোদ্ধা’, ‘স্বামী স্ত্রীর যুদ্ধ’, ‘সুলতান’, ‘মনের সাথে যুদ্ধ’, ‘ধোঁকা’, ‘হিংসার পতন’, ‘মা আমার স্বর্গ’, ‘সন্তান যখন শত্রু’, ‘প্রেমের নাম বেদনা’, ‘ছায়াছবি’, ‘বিপদজনক’, ‘বলো না ভালোবাসি’, ‘লাল দরিয়া’, ‘টাকা’, ‘বাধা’, ‘জমিদার’সহ আরও বেশ কিছু সিনেমা।
২০১০ সালে কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘ওরা আমাকে ভালো হতে দিল না’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান তিনি। পূর্ণিমা শুধু অভিনয় করেই দর্শকদের মুগ্ধ করেননি, পাশাপাশি উপস্থাপনা দিয়েও মন জয় করেছেন। তার সাবলীল উপস্থাপনায় ‘এবং পূর্ণিমা’ ও ‘পূর্ণিমার আলো’ অনুষ্ঠান দু’টি দর্শকের মনে গেঁথে আছে।
ডিবিসি/আরপিকে