রাজধানীতে বিবাহ-বিচ্ছেদ বা তালাকের পরিমাণ বাড়ছে। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩৬টি তালাকের ঘটনা ঘটছে। তালাকের আবেদনে এগিয়ে আছেন নারীরা। ক্ষমতায়ন ও স্বাবলম্বী হওয়ার ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্বে তালাকের হার বাড়ছে বলে মনে করেন গবেষকেরা। তারা বলছেন, প্রচলিত আইনের কঠোর প্রয়োগ আর কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে তালাকের হার কমিয়ে আনা যেতে পারে।
গবেষণার তথ্যমতে, রাজধানীতে দিনে তালাক হয় ৩৬টি। আর প্রতি ১০টি আবেদনের ৭টিই আসছে নারীর কাছ থেকে। তালাক নোটিশের পর সমঝোতা ৫ শতাংশের নিচে।
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তথ্যমতে, ২০২০ সালে বিচ্ছেদের সংখ্যা ১২ হাজার ৫১৩টি, ২০২১ সালে বিচ্ছেদের সংখ্যা ১৪ হাজার ৬৬৯টি (২ হাজার ১৫৬টি বৃদ্ধি), ২০২২ সালে বিচ্ছেদের সংখ্যা ১৩ হাজার ২৮৮টি (১ হাজার ৩৮১টি বৃদ্ধি)।
২০২২ সালে ঢাকার বাইরে চট্টগ্রামে ৫ হাজার ৯৭৬টি, রংপুরে ৭ হাজার ২১৫টি, ময়মনসিংহে ৬ হাজার ৩৯০টি বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটেছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসেবে দেখা যায়, ২০২২ সালে দেশে তালাকের হার আগের বছরের প্রায় দ্বিগুণ। আর শহরের তুলনায় তা গ্রামেই বেশি। ২০২২ সালে বিচ্ছেদের হার ১.৪ শতাংশ, ২০২১ সালে ০.৭ শতাংশ।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ম্যান অ্যান্ড ম্যাসকিউলিনিটিজ স্টাডিজ-সিএমএমএসের তথ্য বিচ্ছেদের হার শিক্ষিত ও কর্মজীবী দম্পতিদের মধ্যে বেশি। এর কারণও খুঁজে পেয়েছেন তারা।
বিবাহ বিচ্ছেদের মূল কারণগুলোর মধ্য অন্যতম হলো- নারীর ক্ষমতায়নের সাথে পুরুষের খাপ খাওয়ানোর ব্যর্থতা, নারীর আত্মনির্ভরশীলতা ও সচেতনতা বৃদ্ধি, পারিবারিক নিপীড়ন-নির্যাতন, আইনি প্রক্রিয়ার সহজীকরণ, শারীরিক সম্পর্কে অপূর্ণতা, বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক, পারস্পরিক সমঝোতা তরির সময়ের অভাব, বিচ্ছেদ প্রসঙ্গে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির বদল, মাদকাসক্তি সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব, আইন বাস্তবায়ন ও কাউন্সেলিংয়ের অভাব।
ডিবিসি/কেএমএল