এ বিষয়ে ইয়াছিন আলী, চেয়ারম্যান ও চিফ কনসালট্যান্ট, ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল, ধানমন্ডি কিছু পরামর্শ দিয়েছেন তা নিচে তুলে ধরা হলো।

এক. দীর্ঘ সময় কুঁজো হয়ে বসে থাকলে বা চেয়ারের ওপর বাঁকা হয়ে বসে থাকলে বুকের মাংসপেশিতে চাপ পড়ে। ফলে কাঁধ সামনের দিকে ঝুঁকে যায়। তাই বসে কাজ করার সময় ৯০ ডিগ্রি কোণ করে ও চেয়ারের চাকার কাছাকাছি বসার চেষ্টা করুন। কম্পিউটার স্ক্রিনে তাকানোর সময় সামনে ঝোঁকা যাবে না।

দুই. কাজের ফাঁকে নিয়মিত বিরতি নেওয়ার অভ্যাস না করলে পিঠে ব্যথা হতে পারে এবং পেশি দুর্বল হতে পারে। আধা ঘণ্টা পরপর কিছুক্ষণের জন্য উঠে দাঁড়ালে এবং হাঁটাহাঁটি করলে উপকার পাওয়া যাবে। 

তিন. অফিসের বা বাসার চেয়ার মেরুদণ্ডের বাঁকা স্থানের ভার ঠিকমতো নিচ্ছে কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে হবে। কারণ, বসার সময় মাথা সোজা ও মেরুদণ্ড চেয়ারের সঙ্গে লেগে থাকতে হবে। প্রয়োজনে চেয়ার নিজের মাপমতো ঠিক করে নিতে হবে।

চার. দীর্ঘস্থায়ী ও তীব্র মানসিক চাপ পিঠব্যথার অন্যতম কারণ হতে পারে। চাপমুক্ত থাকতে বই পড়া, বাগান করা, গান শোনা বা সঙ্গীর সঙ্গে আনন্দময় মুহূর্ত কাটানো যেতে পারে। 

পাঁচ. শোবার তোশকটাও হতে হবে ভালো মানের। ভালো তোশক সাধারণত ৯ থেকে ১০ বছর টেকে। তবে পিঠে অস্বস্তি হলে পাঁচ থেকে সাত বছর অন্তর তোশক পরিবর্তন করা উচিত। বেশি শক্ত না, বেশি নরম না-এমন তোশক ব্যবহার করতে হবে। 

ছয়. কাঁধে প্রতিদিন ভারী ব্যাগ বহন করলে পিঠে ব্যথা হতে পারে। ব্যাগের ওজন শরীরের ওজনের তুলনায় কোনোভাবেই ১০ শতাংশের বেশি হওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে সচেতন হতে হবে।

সাত. নিয়মিত হাই হিল পরলে পিঠ বাঁকা হয় বলে মেরুদণ্ডে চাপ সৃষ্টি করে। ফ্ল্যাট স্যান্ডেল পরলে পায়ের পাতার প্রান্তে চাপ পড়ে। সবচেয়ে ভালে আরামদায়ক ফ্ল্যাট জুতা বা স্নিকারস পরা। অনেক দূর হাঁটতে হবে—এমন জায়গায় যাওয়ার সময় হিল না পরা ভালো। 

আট. যারা মোটরসাইকেল বা সাইকেল নিয়মিত চালান তাদের এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে। এসব বাহন চালানো শুরুর পর পিঠে ব্যথা হলে এই বাহন নতুন করে সমন্বয় করতে হতে পারে। ৩০ থেকে ৭০ শতাংশ বাইকার পিঠে ব্যথা অনুভব করেন। সাধারণ সাইকেলের ক্ষেত্রে ঊরুসন্ধি থেকে হ্যান্ডেল বার এক থেকে দুই ইঞ্চি সামনে থাকবে। আর মাউন্টেইন বাইকের ক্ষেত্রে তিন থেকে ছয় ইঞ্চি সামনে থাকবে। প্যাডেল নিচে থাকলে বসা অবস্থায় পায়ের অবস্থান হতে হবে ঘড়ির কাঁটায় ছয়টা বাজারমতো। বাইকের হাতল ধরার ক্ষেত্রে কনুই অল্প বাঁকা হবে। হাতে কোনো রকম চাপ পড়লে বুঝতে হবে সমস্যা আছে।