বিবিধ, স্বাস্থ্য

তোকমার স্বাস্থ্য উপকারিতা

লাইফস্টাইল ডেস্ক

ডিবিসি নিউজ

শনিবার ১৮ই নভেম্বর ২০২৩ ০৪:২৩:৩১ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

ছোট কালো রঙের একটি বীজ তোকমা, যা মূলত বিভিন্ন মিষ্টি পানীয় কিংবা শরবত তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায়ও তোকমা বীজ অন্যতম একটি উপাদান। সুগন্ধী এ ভেষজ ব্যবহার করা হয় এর কড়া, মিষ্টি ও হালকা ঝালযুক্ত স্বাদের জন্য। ইতালি, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম এবং ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের রান্নায় তোকমার ব্যবহার বেশি।

স্থানভেদে সবজা বীজ, মিষ্টি বাসিল, ফালুদা বীজ কিংবা তুর্কমারিয়া বীজ হিসেবে পরিচিত। বহু গুণ রয়েছে বীজটির। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদন বলছে, তোকমা শুধু রান্নায় নয়, এটি দিয়ে তৈরি পানীয়ও বেশ উপকারী। তোকমা বীজ পানিতে ভিজিয়ে রেখে এ পানীয় তৈরি করা হয়। তোকমা বীজ ছোট ও কালো এবং পানিতে ভেজালে চিয়া বীজের মতো নরম ও আঠালো রূপ নেয়। তোকমা বীজের পানি প্রায়ই বিভিন্ন ফল, মিষ্টান্ন এবং বিভিন্ন ভেষজের সঙ্গে মিশিয়ে পানীয় তৈরি করা হয়।

 

তোকমা বীজের পানীয় স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর। এর বেশ কিছু স্বাস্থ্যগত উপকারী গুণ রয়েছে— হজমে সহায়তা করে, ওজন কমাতে সহায়তা করা, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, ত্বকের স্বাস্থ্যে উন্নতি করে এবং শরীরে ঠান্ডা ও সতেজ ভাব আনে। 

 

তোকমা বীজে রয়েছে ফাইবার, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, আয়রন ও ম্যাগনেশিয়ামের মতো খনিজ এবং উপকারী ফ্যাটি অ্যাসিড। তোকমার ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড দেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

 

তোকমা বীজে রয়েছে মিউসিলেজ। এটি একধরনের জেলজাতীয় পদার্থ, যা পানিতে ভেজালে ফুলে ওঠে। এই জেলজাতীয় পদার্থ অন্ত্রের কার্যক্রম নিয়মিত করে খাবার হজমে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।

 

তোকমা বীজের ফাইবার পাকস্থলীতে পূর্ণতার অনুভূতি বাড়ায়। এর ফলে অতিরিক্ত খাবারের চাহিদা কমে। এ ছাড়া খাবার হজমে এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান শোষণে সাহায্য করে, এতে সঠিক ওজন বজায় রাখা সম্ভব হয়।

 

তোকমা বীজে ভিটামিন ‘কে’-এর মতো পুষ্টি উপাদানসহ খনিজ (ক্যালসিয়াম) এবং আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আছে। রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে তোকমা বীজের ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে। তোকমা বীজ রক্তপ্রবাহে শর্করা সরবরাহের গতি কমিয়ে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রার নিয়ন্ত্রণ করে।

 

তোকমা বীজে উপস্থিত পলিফেনলের মতো অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি কমায়। এগুলো রক্তে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ ও হৃৎপিণ্ডের সঠিক কার্যক্রম বজায় রাখতে সাহায্য করে। তোকমা বীজের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ফ্রি র‍্যাডিকেলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। এই ফ্রি র‍্যাডিকেলগুলো ত্বকের ক্ষতি করে এবং অকালে বার্ধক্যের ছাপ ফেলে। নিয়মিত তোকমা বীজের পানি পান স্বাস্থ্যকর। এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখে।

 

তোকমা গরমকালে দেহের তাপমাত্রা কমাতে সহায়তা করে। আর এ কারণে গরম আবহাওয়ার দেশগুলোতে বহু মানুষ তোকমার শরবত পান করে। এতে মানসিক চাপ ও উদ্বেগ প্রশমন করতে সাহায্য করে। শরীরকে শিথিল করে এবং সামগ্রিক মানসিক সুস্থতার উন্নতি সাধন করে।

 

তবে, তোকমা বীজের পানির নির্দিষ্ট স্বাস্থ্যগত সুফলের ওপর গবেষণা সীমিত। অন্য যেকোনো খাবারের মতোই এই পানীয় পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করা উচিত। স্বাস্থ্যগত কোনো জটিলতা থাকলে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

আরও পড়ুন