শীতকালে লেপ-কম্বলের ওম ছেড়ে কি সহজে বিছানা ছাড়া যায়? শীত কিংবা গ্রীষ্মে সব সময়ই সূর্য ওঠার অনেক পরে বিছানা ছাড়ার অভ্যাস অনেকের আছে। অবশ্য এরকম আরাম রেখে কার ই বা উঠতে মন চায়? নাগরিক এই ব্যস্ততার জীবনে এতটুকু বিলাসিতা করার উপায় কোথায়! আপনি চান বা না চান, প্রতিদিন খুব ভোরেই জাগতে হবে! আর এই নিয়েই যত গড়িমসি।
সকালে ঘুম ভাঙলে বেশ বড় একটা দিন পাওয়া যায়। অনেক কাজ করা যায়, কোন ব্যতিব্যস্ত থাকে না। চাপ ছাড়া দিনটা শুরু হয়।
বছরের সব সময়ই খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠা জরুরি। শীতকালে জড়তা বেশি থাকে, আলস্য কাজ করে। তবু উঠতে হবে। তা না হলে অভ্যাস চলে যাবে। আমাদের দেহঘড়ির সুস্থতা নির্ভর করে কতটুকু ঘুমাচ্ছি, কতটা সকালে উঠছি তার উপর।
যতই কাজ থাকুক না কেন, পর্যাপ্ত ঘুম ও সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করার দিকে মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। কখন আমরা ঘুম থেকে উঠছি, তা কিন্তু আমাদের উদ্ভাবনী শক্তি আর কর্মস্পৃহার ওপর প্রভাব ফেলে। ভোরে জেগে উঠতে যা খেয়াল রাখতে পারেন-
ঘুমের আড়ষ্টতা কাটাতে এক কাপ চা দিয়ে শুরু করতে পারেন দিনটা। এক কাপ চা শীতের সকালে আপনাকে বাড়তি উষ্ণতা দেবে। আর প্রতিদিন সকাল সকাল পত্রিকার পাতা উল্টিয়ে চা পানের অভ্যাস থাকলে আপনার দিনের শুরুটা অন্য রকম হবেই।
আপনি হয়ত সকাল ৬ টায় উঠতে চান। কিন্তু কোনোভাবে আপনি রাতে ভাবলেন সাড়ে ৫ টায় উঠলে ভালো হয়। এখানেই ভুল করছেন। যখন উঠতে চান, সেটাই চিন্তা করে রাখুন। অবচেতন মন কোনোভাবে দ্বিধায় থাকলে আপনার ঘুমে দারুণভাবে ব্যাঘাত ঘটবে। দেখবেন হয়তো ৬ টায় ওঠার জায়গায় আপনার ৪ টায় ঘুম ভেঙে গেল। তখন আবার ঘুমালেন, আবার উঠলেন অনেক পরে।
ঘুমাতে যাওয়ার আগে পরদিন সকালে তাড়াতাড়ি উঠতে হবে বলে মনের ওপর অতিরিক্ত চাপ দেবেন না। বারবার যদি ভাবেন কাল সকালে তাড়াতাড়ি উঠতে হবে তাহলে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটবে। ঘুমাতে দেরি হবে, আর পরদিন তাড়াতাড়ি ওঠার সব পরিকল্পনা ভেস্তে যাবে।
মুঠোফোনের নীল আলো আমাদের ঘুমে বিঘ্ন ঘটায়। ঘুমানোর আগে শুয়ে শুয়ে ফোনে সামাজিক যোগাযোগের সাইটগুলোতে ঘোরাঘুরি কিংবা গেমস খেলা থেকে বিরত থাকুন।
রাতে বই পড়ার অভ্যেস থাকলে ভালো। পড়তে পড়তে ভালো ঘুম হয়। বই পড়ার মাঝেই চোখ আপনাআপনি বন্ধ হয়ে যাবে। তবে রাতের দিকে ফোন করা বা ফোন রিসিভ করা থেকে বিরত থাকুন। দরকার হলে, ফোন বন্ধ রেখেই ঘুমাতে যান।
ঘুম থেকে উঠে কিছু সময় হাঁটাহাঁটি করুন। হাঁটাহাঁটি করে এসে বিশ্রাম নিতে নিতে এক কাপ চায়ের সঙ্গে বিস্কুট কিংবা সামান্য মুড়ি খেয়ে নিতে পারেন। বিশ্রাম শেষে এবার গোসল সেরে নিন। দেখবেন শরীরটা অনেক হালকা ও ঝরঝরে হয়ে গেছে। এভাবে নিয়মিত কয়েকদিন অভ্যাস করুন। দেখবেন সকালে ঘুম থেকে ওঠার আনন্দটাই আলাদা।
সকালে যেন ঠিকমতো সূর্যের আলো বা রোদ এসে পড়ে। ঘর যত অন্ধকার রাখবেন, ঘুম থেকে উঠতে তত দেরি হবে।
সারাদিন যদি কাজের মধ্যে থাকেন, ক্লান্তিতে ঘুম আসা অনিবার্য। পরের দিন সকালে নির্দিষ্ট সময়ের লক্ষ্য নিয়ে ঘুমাতে যান। লক্ষ্য স্থির থাকলে সূর্যের আলো ফোটার আগেই আপনি বিছানা ছাড়বেন নিশ্চিত।