দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর সেঞ্চুরির দেখা পান সাকিব আল হাসান। তাও সেটি হয়ে যায় ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি। গত ২০১৭ সালের ১৩ জানুয়ারি তিনি ডাবল সেঞ্চুরির দেখা পান। রান করেন ২১৭ রান।
প্রথম ওই ডাবল সেঞ্চুরি অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যায় সাকিবকে। ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির দেখা পেয়ে সাকিব আল হাসান টেস্টে বাংলাদেশের তামিম এবং মুশফিকদের কাতারে এসে দাঁড়ান। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২০০ রানের মাইলফলকে পৌঁছতে ২৫২ বল মোকাবেলা করেন সাকিব। কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমের ওভারের চতুর্থ বলে চার মেরে ডাবল সেঞ্চুরির মাইলফলকে পৌঁছেন তিনি। অসাধারণ এ ইনিংস খেলার পথে ৩০টি চারের মার মারেন সাকিব আল হাসান।
সে সময়ে ডাবল সেঞ্চুরি কাকে উৎসর্গ করবেন সে প্রশ্ন করা হয়নি সাকিবকে। হয়তো ওসই সময়ে তিনি বলতে পারতেন তার বাবা-মা বা কন্যার কথা। অথবা কোনো শিক্ষক, কোচ; কিংবা স্ত্রী শিশিরের কথাও বলতে পারতেন। বলতে পারতেন নয়, হয়তো শিশিরের কথাই বলতেন। কারণ তার ২১৭ রান, বাংলাদেশ দলের হয়ে সবচেয়ে লম্বা টেস্ট ইনিংস খেলার পেছনে শিশিরেরও একটু ছোঁয়া ছিল।
ওয়েলিংটন টেস্টের প্রথম দিন ৪ রান করে স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান সাকিব। অন্য সময় হলে এ নিয়ে খচখচানি মাঠেই ঝেড়ে ফেলতেন। কিন্তু বউ ক্রিকেট বোঝা শুরু করলে তা কি আর সম্ভব! হোটেল রুমে সাকিব দম্পতির ক্রিকেটীয় আলোচনার বিস্তারিত জানা যায়নি।
তবে সংবাদ সম্মেলনে সাকিব যেটুকু জানিয়েছিলেন তাতে এটা বোঝা যায় যে, ২১৭ রানের মহাকাব্য তিনি বেসিন রিজার্ভে লিখলেও এর ভিত ফেদারস্টন স্ট্রিটের রিজেস ওয়েলিংটন হোটেলে গড়া, ‘কাল (আজ) মাঠে আমার ক্যাচ পড়ল। সন্ধ্যায় রুমে গেলাম...বউ ইদানীং ক্রিকেট বোঝা শুরু করেছে। অনেক কথা বলছিল। ওকে আমি কিছু বলিনি, তবে চিন্তা করে দেখলাম বড় খেলোয়াড়েরা এ রকম সুযোগ পেলে বড় রান করে। আমিও ভাবলাম দেখি করা যায় কি না। রাত থেকেই কেমন একটা আত্মবিশ্বাস ছিল ভেতরে।’
সাকিব আসলে ওই দিনে দুটি কীর্তি গড়েন। প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন, সেই সুবাদে ওই সময়ে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের ইনিংসও তার হয়। যাকে পেছনে ফেলেন ওই গৌরবের মালা, সেই তামিমের কাছ থেকেই পান প্রথম অভিনন্দন। ড্রেসিংরুম থেকে তামিমই প্রথম হাততালি দিয়ে অভিনন্দন জানান বন্ধু-সতীর্থকে। মজার ব্যাপার, তামিমের হাততালির আগ পর্যন্ত সাকিব জানতেনই না, দেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ইনিংস খেলার কীর্তি নতুন করে গড়ে ফেলেছেন। সাকিব বলেন, ‘আমি ভাবছিলাম ওর রান ২১৪। ওই সিঙ্গেলটা নেওয়ার পর যখন দেখলাম তামিম হাততালি দিচ্ছে, তখন বুঝলাম এখন এটাই সর্বোচ্চ।’
ডিবিসি/কেএলডি