বাংলাদেশ, কৃষি

দেশে সবচেয়ে বেশি শীত পড়ার রেকর্ডগুলো জেনে নিন

বিবিসি, বাংলা

ডিবিসি নিউজ

শুক্রবার ২৬শে জানুয়ারী ২০২৪ ০৪:১৪:৫৩ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

গত দুই সপ্তাহ ধরে দেশে শীতের দাপটটা বেশ টের পাচ্ছেন সবাই। বিশেষ করে উত্তর অঞ্চলে হার কাঁপানো শীতে নাজেহাল সবশ্রেণি পেশার মানুষ। এছাড়া ইতিমধ্যে এক সঙ্গে ৪০ এর বেশি জেলায় বয়ে গেছে শৈত্যপ্রবাহ। ঘন কুয়াশার কারণের অনেক এলাকায় সূর্যের মুখ পর্যন্ত দেখাও মেলে নি। এর মধ্যেই বইছে হিমশীতল বাতাস। এতে সারা দেশেই জনজীবন বেশ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

শীতের এমন পরিস্থিতি আর কতদিন চলবে? এবছর শীতই-বা থাকবে কতদিন? এমন সব প্রশ্নই এখন ঘুরছে শীতে কাবু সাধারণ মানুষের মুখে মুখে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, এ দফায় সারা দেশে যে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে, সেটি এ মাসজুড়ে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এই শীতের মধ্যে আবার কোথাও কোথাও হালকা বা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিও হয়েছে। সামনে আরও বিভিন্ন স্থানে এমন বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।


জানুয়ারির শেষ থেকে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে সারা দেশে আরও একটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলেও পূর্বাভাস দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
এছাড়া গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার শীত একটু বেশি সময় স্থায়ী হতে পারে বলেও জানিয়েছেন তারা। এবছর জানুয়ারির শুরু থেকেই সারা দেশে শীতের তীব্রতা বেশ বেড়েছে।


এর মধ্যে বছরের প্রথম শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয় জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে, যা শুরুতে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের কয়েকটি জেলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল।কিন্তু তৃতীয় সপ্তাহ থেকে শৈত্যপ্রবাহ অন্যান্য জেলাতেও ছড়িয়ে পড়ে। বুধবার পর্যন্ত সারা দেশের ২১টি জেলার উপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তবে শীতের প্রকোপ সারা দেশেই টের পাওয়া যাচ্ছে।

 

অতীতের যত রেকর্ড: আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসেব বলছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি শীত পড়েছে ২০১৮ সালে। ওই বছরের ৮ই জানুয়ারি পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা নেমেছিল ২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড। একই দিনে, সৈয়দপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ২.৯ ডিগ্রি। এছাড়া নীলফামারীর ডিমলায় ৩ ডিগ্রি, কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ৩.১ ডিগ্রি এবং দিনাজপুরে ৩.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।


এছাড়া সেদিন রংপুর বিভাগের আট জেলার সবক'টিতেই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পাঁচ ডিগ্রির কম ছিল বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সে বছর দফায় দফায় তীব্র শৈত্যপ্রবাহও বয়ে যেতে দেখা গিয়েছিল। এছাড়া ২০১৩ সালে ১০ই জানুয়ারি সৈয়দপুরে ৩ ডিগ্রি, ২০০৩ সালের ৯ই জানুয়ারি রাজশাহীতে ৩.৪ ডিগ্রি এবং ১৯৯৬ সালে দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৩.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এর বাইরে, ২০১৯ সালে তেঁতুলিয়ায় ৪.৯ ডিগ্রি, ২০১১ সালের ১২ই জানুয়ারি যশোরে ৪.৫ ডিগ্রি এবং ২০১৭ সালে কুড়িগ্রামে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় ।


মৌসুমের শীতলতম দিন গত মঙ্গলবার (২৩শে জানুয়ারি) চুয়াডাঙ্গায় মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এদিন সেখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এখনও পর্যন্ত এটিই চলতি মৌসুমের শীতলতম দিন। এদিন ঢাকাতেও বছরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। মঙ্গলবার ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে এটিই সাম্প্রতিককালে ঢাকার রেকর্ড সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নয়।


আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসেবে দেখা যাচ্ছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ২০১৩ সালে। সেবছর শীতে রাজধানীর তাপমাত্রা নেমে এসেছিল ৭.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এরপর দ্বিতীয় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ২০১৮ সালের ৮ই জানুয়ারি। তখন তাপমাত্রা নেমেছিল ৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। আর ২০২৩ সালের শীতে ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

ডিবিসি/কেএলডি

আরও পড়ুন