সারা দেশে বেসরকারি স্কুল-কলেজ মাদ্রাসায় ৫০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেবে সরকার। শূন্য পদের বিপরীতে এ নিয়োগ দিতে জোর প্রস্তুতি চালাচ্ছে বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)।
এজন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ই-রেজিস্ট্রেশন বা প্রোফাইল হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু করেছে। সেই চাহিদা পাওয়ার পরপরই ৫ম গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শূন্য পদের বিপরীতে এর আগে চারটি গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বড় ধরনের শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছে সরকার। সর্বশেষ চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ৩৮ হাজার এবং তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ৫৪ হাজারের বেশি শিক্ষক নিয়ৈাগ দেওয়া হয়। এবার দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শূন্য পদের চাহিদা পাওয়া গেছে। এগুলো এখন যাচাই বাছাই হচ্ছে। সেই সংখ্যা অর্ধ লক্ষাধিক হতে পারে বলে জানিয়েছে এনটিআরসিএ।
সংস্থাটি বলছে, শূন্য পদ পূরণ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদানের চাহিদা ঠিক রাখতে এই শিক্ষক নেওয়া হবে। সরকারের এজেন্ডার অংশ হিসেবে এপ্রিল মাসেই এ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ এবং এ বছরের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে চায় এনটিআরসিএ।
জানা গেছে, এনটিআরসিএ ইতোমধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ই-রেজিস্ট্রেশন শেষে শিক্ষকদের শূন্য পদের চাহিদা আহ্বান করেছে। চাহিদা পাওয়ার পর যাচাই-বাছাই শেষে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন চাওয়া হবে। অনুমোদন পেলে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।
চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে শূন্য পদ ছিল ৬৮ হাজার ৩৯০টি। যোগ্য প্রার্থী না পাওয়ায় মাত্র ২৭ হাজার ৭৪ জন প্রার্থীকে চূড়ান্ত সুপারিশ করা সম্ভব হয়। এবারও শূন্য পদের সংখ্যা ৫০ হাজারের বেশি হবে। কারণ, আগের গণবিজ্ঞপ্তির ৪১ হাজার পদ এখনো ফাঁকা রয়েছে।
জানতে চাইলে এনটিআরসিএ সচিব ওবায়দুর রহমান বলেন, প্রতি বছর একটি করে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার অংশ হিসেবে ৫ম গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। আশা করছি এপ্রিলের মধ্যে হবে। তার আগে শিক্ষকদের চাহিদা বা রিকুইজিশন কার্যক্রম শেষ করতে হবে।
জানা গেছে, গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য ২৫ জানুয়ারি মোবাইল অপারেটর টেলিটকের সঙ্গে পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তি নিয়ে বৈঠকে কারিগরি বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও এনটিআরসিএর নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ে নতুন পরিপত্র জারি করেছে।
এনটিআরসিএ সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ১ ডিসেম্বর মাসে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল এনটিআরসিএ। এরপর থেকে চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত শূন্যপদ ধরে ৫ম গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সেখানে ৫০ থেকে ৫৫ হাজারের বেশি পদ ফাঁকা থাকতে পারে।
২০২২ সালের ২১ ডিসেম্বর চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল এনটিআরসিএ। এতে শূন্য পদ ছিল ৬৮ হাজার ৩৯০টি। এগুলো ছিল এমপিওভুক্ত। গত বছরের ১২ মার্চ ওই গণবিজ্ঞপ্তির ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এতে ৩২ হাজার ৪৩৮ প্রার্থীকে প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করা হয়।
পরে পুলিশ ভেরিফিকেশন, বয়স বিবেচনা ও সনদ যাচাই শেষে ২০ সেপ্টেম্বর ২৭ হাজার ৭৪ প্রার্থীকে নিয়োগের চূড়ান্ত সুপারিশ করা হয়। তাদের মধ্যে স্কুল ও কলেজে ১৩ হাজার ৭০৫ জন, মাদ্রাসায় ১১ হাজার ২৭৯, কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৫১৬, সংযুক্ত স্কুলে ১ হাজার ৫৮৩, সংযুক্ত মাদ্রাসায় ৬২১ জন সুপারিশ পেয়েছিলেন।
ডিবিসি/ এইচএপি