কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাবে চাহিদা মিটিয়েও উদ্বৃত্ত থাকার কথা অন্তত ২২ লাখ টন আলু। তবুও লাফিয়ে লাফিয়ে পণ্যটির দাম বাড়ার পেছনে কোনো কারণ খুঁজে পান না ভোক্তারা।
বিষয়টিকে অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের নৈতিক অবক্ষয়ের ফল হিসেবে দেখছেন বাজার বিশ্লেষকরা। সুরাহায় প্রাইস কমিশন গঠন করার পরামর্শ তাদের।
দেশে বছরে আলুর চাহিদা সর্বোচ্চ ৯০ লাখ টন। গত বছর পণ্যটির উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ১২ লাখ টন। অর্থাৎ চাহিদা মেটানোর পরও মজুত থাকার কথা অন্তত ২২ লাখ টন আলুর। এই হিসাব কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের।
চাহিদা আর জোগানের এই অংকটা সহজ হলেও বাজারের চিত্র বেশ জটিল। মৌসুমে ১০-১৫ টাকায় কেনা আলুর দাম বাড়তে বাড়তে গেলো সপ্তাহে উঠেছিল ৬০ টাকায়। কোথাও কোথাও বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকাতেও।
পরিস্থিতি যখন সীমা ছাড়াচ্ছে, ঠিক তখনই এর লাগাম টানার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। অনুমতি দেয়া হয় ভারত থেকে ৩৫ হাজার টন আলু আনার। যা না আসতেই প্রভাব পড়া শুরু হয়েছে বাজারে। এক লাফে দর কমেছে ১৫-২০ টাকা।
এক বিক্রেতা বলেন, গত সপ্তাহে প্রতি কেজি আলুর মূল্য ছিল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। এখন বিক্রি করছি ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়। আরেক বিক্রেতা বলেন, ডায়মন্ড আলু আমরা ৩৫ থেকে ৩৮ টাকায় বিক্রি করছি। অনেকটাই দাম কমছে।
আলুর দর কমায় খুশি ক্রেতারা। তবে এমন চোর পুলিশ খেলা নিয়ে বেশ বিরক্ত সবাই। এক ক্রেতা বলেন, এতদিন ভারত থেকে আলু আসেনি। ফলে বাংলাদেশে মূল্য বেশি ছিল। কেজিপ্রতি দাম ছিল ৭০ টাকা। এখন ভারত থেকে আসা শুরু হয়েছে। ফলে দরপতন ঘটছে। আমার মনে হয়, ব্যবসায়ীদের মধ্যে কিছু একটা আছে।
যখন তখন ইচ্ছামতো দাম বাড়ানো আর কমানোর বিষয়টিকে ব্যবসায়ীদের নৈতিক অবক্ষয়ের ফল হিসেবে দেখছেন বাজার বিশ্লেষকরা। বিষয়টির সুরাহায় কৃষিপণ্যের জন্য আলাদা প্রাইস কমিশন গঠন করার পরামর্শ তাদের।
সাপ্লাই চেইন স্পেশালিস্ট কৃষিবিদ মো. মুজিবুল হক বলেন, বিশ্ববাজার ও স্থানীয় বাজারে জিনিসপত্রের দর-দাম বৃদ্ধি বিষয়ে সরকারকে তথ্য দেবে এ কমিশন। আমদানি করার পরামর্শ দেবে তারা। এককথায় পণ্য সম্পর্কে সবাইকে সঠিক উপাত্ত দেবে। পাশাপাশি ন্যায্য মূল্য সম্পর্কে জানাবে।
ডিবিসি/ এইচএপি