কুড়িগ্রাম সদরে সড়কে সাইড দেওয়াকে কেন্দ্র করে সদর উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পিটুনিতে কুড়িগ্রাম পৌর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও জেলা মটর মালিক সমিতির সদস্য শরিফুল ইসলাম সোয়ান মারা গেছেন।
শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকালে জেলা সদরের খলিলগঞ্জ বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজভি কবির চৌধুরী বিন্দু ও তার অনুসারী ছাত্রলীগ কর্মীদের অভিযুক্ত করেছেন সোয়ানের বন্ধু ও রাজনৈতিক সহকর্মীরা।
নিহত শরিফুল ইসলাম সোয়ান (৪৪) জেলা শহরের ঘোষপাড়ার আমজাদ হোসেন বুলুর ছেলে। তিনি একই সাথে জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সদস্য।
সোয়ানের বন্ধু রেদওয়ান মাহমুদ জানান, সোয়ান ত্রিমোহনী বাজার এলাকা থেকে প্রাইভেটকার যোগে তার সাথে শহরের দিকে আসছিলেন। সোয়ান গাড়ির পেছন ছিটে বসে ছিলেন। এ সময় খলিলগঞ্জ বাজার এলাকার অভিনন্দন কনভেনশন সেন্টারের সামনে একটি মোটরসাইকেলে তিন ছাত্রলীগ নেতা দ্রুত গতিতে শরিফুল ইসলাম সোয়ানের গাড়ির পাশে চলে আসেন। এ সময় তাদের সাইড না দেওয়ায় ছাত্রলীগ নেতাদের বহনকারী মোটরসাইকেল সোয়ানের গাড়িতে ধাক্কা লাগে। এতে মোটরসাইকেলে থাকা ছাত্রলীগের দুই কর্মী ছিটকে পড়ে আহত হলে সোয়ান ও তার বন্ধু আহতদের অটোরিকশা যোগে হাসপাতালে পাঠান তাদের। খবর পেয়ে সদর উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক বিন্দু ঘটনাস্থলে পৌঁছে গাড়ি সহ সোয়ান ও তার বন্ধুদের আটক করেন। সোয়ান নিজের পরিচয় দিলে বিন্দু ও তার কর্মীরা সোয়ানকে পেটান। সোয়ান ঘটনাস্থলে অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিন্দু প্রাইভেটকার আটক করতে চাইলে সোয়ানের বন্ধুরা এতে বাধা দেন।
এ সময় সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজভি কবির চৌধুরী বিন্দু নিজেই প্রাইভেটকার চালিয়ে সোয়ানকে নিয়ে হাসপাতালে রওনা দেন। হাসপাতালে পৌঁছানোর পর বিন্দু আবারও সোয়ানকে পেটান। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে দায়িত্বরত চিকিৎসক সোয়ানকে মৃত ঘোষণা করেন।
এসময় খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবীতে শহরে শহীদ মিনার এলাকায় রংপুর কুড়িগ্রাম সড়ক অবরোধ করে মটর মালিক ও শ্রমিক সমিতির মানুষজন। প্রায় এক ঘন্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে।
পরে পুলিশ এসে তাদের আশ্বস্ত করলে অবরোধ তুলে নেন তারা।
পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা শরিফুল ইসলাম সোয়ান হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত সদর উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রেজভি কবির চৌধুরী বিন্দু ও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রলীগের সভাপতি ঝিনুক আহমেদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরও যারা জড়িত রয়েছেন তাদের ব্যাপারেও আইনশৃংখলা রক্ষাবাহিনীর তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার তদন্ত চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ডিবিসি/ এসএসএস