আন্তর্জাতিক

চ্যালেঞ্জের মুখে জাপানের বিখ্যাত টয়োটা মোটর কর্পোরেশন

ডেস্ক নিউজ

ডিবিসি নিউজ

শনিবার ৮ই জুন ২০২৪ ০৫:০৮:৪৭ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

বর্তমানে বাংলাদেশসহ বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বেশি চাহিদা সম্পন্ন প্রাইভেট কার বা গাড়ি হচ্ছে জাপানের টয়োটা কর্পোরেশনের তৈরি বিভিন্ন মডেল ও দামের রিকন্ডিশন এবং ব্যান্ড নিউ গাড়ি।

বিশেষ করে নান্দনিক ডিজাইন, নিরাপদ ও খুবই টেকসই হওয়ার কারণে অন্য কোনো কোম্পানির একেবারে নতুন গাড়ি অপেক্ষা সারা বিশ্বে টয়োটা কোম্পানির পুরোনো বা রিকন্ডিশন গাড়ি চাহিদা কিন্তু অনেক বেশি। তবে জাপানে টয়োটা বাদেও নিশান, সুজুকী ও মিতসুবিশির মতো আরও প্রায় অর্ধ ডজন অটোমোবাইলস ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি সারা বিশ্বে একচেটিয়া রাজত্ব করে বেড়াচ্ছে।

 

জাপানের বিখ্যাত গাড়ি ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি টয়োটা মোটর কর্পোরেশন তাদের ম্যানুফ্যাকচারিং প্লান্টে প্রতি ৩০ সেকেন্ডে আনুমানিক ১টি করে গাড়ি তৈরি করে। তবে বর্তমানে তারা প্রতি বছর আনুমানিক গড়ে ১০ মিলিয়ন বিভিন্ন সিরিজের লাইট কার, পিক আপভ্যান, মাইক্রোবাস উৎপাদন করছে। তবে সবচেয়ে মজার বিষয় হলো যে, বর্তমানে বিশ্বজুড়ে একটি বিখ্যাত অটোমোবাইল ব্র্যান্ড হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করলেও টয়োটা কোম্পানি কিন্তু টেক্সটাইল ব্যবসার মাধ্যমে তাদের ব্যাবসায়িক যাত্রা শুরু করেছিল। জাপানের টয়োটা কর্পোরেশনের বর্তমান সিইও হচ্ছেন আকিও টয়োডা (Akio Toyoda)।

 

চলতি ২০২৪ সালের ২০শে মে প্রকাশিত ফোবর্স ম্যাগাজিনের দেয়া তথ্য মতে, বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ স্থানীয় অটোমোবাইলস কোম্পানি হচ্ছে জাপানের টয়োটা মোটর কর্পোরেশন। টয়োটা কোম্পানির মার্কেট ক্যাপিটাল ভ্যালু হচ্ছে ২৯৮.১৪ বিলিয়ন ডলার। চলতি ২০২৪ সালের হিসেব অনুযায়ী টয়োটা কোম্পানি রেভিনিউ অর্জন ৪১০.৮৯ বিলিয়ন ডলার এবং নিট আয় করে ৪৫.০৬ বিলিয়ন ডলার। তাদের মোট সম্পদের পরিমাণ ৮২১.০৯ বিলিয়ন ডলার এবং বর্তমানে সারা বিশ্বে তাদের প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৩ লক্ষ ৭৫ হাজারের অধিক কর্মী নিয়োজিত রয়েছেন।

 

১৯২৬ সালে প্রতিষ্ঠাতা সাকিচি টয়োডার হাত দিয়ে টয়োটা যাত্রা শুরু করলেও জাপানের টয়োটা কর্পোরেশন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে ও আজ থেকে প্রায় ৮৪ বছর আগে ১৯৩৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট প্রায় ১১.২৩ মিলিয়ন ইউনিট বিভিন্ন সিরিজের ও মডেলের কার নিজ দেশসহ সারা বিশ্বে রপ্তানি করে। যেখানে গত ২০২১ অর্থবছরে টয়োটা প্রায় ৯.৪৭৩ মিলিয়ন ইউনিট বিভিন্ন মডেল ও দামের গাড়ি ও অন্যান্য অটোমোবাইলস সিস্টেম তৈরি করে।

 

বর্তমানে আমেরিকার ‘টেসলা’ ও চীনের ‘বিওয়াইডি’ কোম্পানির (ইভি) কারের ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি হওয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে জাপানের টয়োটা কোম্পানির ফুয়েল চালিত গাড়ির চাহিদা ও উৎপাদন বেশ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।

 

রয়টার্স নিউজের দেয়া তথ্যমতে, চলতি ২০২৪ সালের এপ্রিলে সারা বিশ্বে টয়োটা কোম্পানির নিজস্ব উৎপাদন ও বিক্রি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় অনেকটাই হ্রাস পায়। টয়োটার দেয়া তথ্যমতে, গত এপ্রিলে সারাবিশ্বে টয়োটার বিক্রি ০.৫% হ্রাস পায়। বিশেষ করে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ও বড় অটোমোবাইলস মার্কেট হিসেবে চীনের বাজারে বিক্রি কমেছে ২৭% এবং নিজ দেশ জাপানে তা কমেছে প্রায় ১৪%।

 

বর্তমানে মার্কেট ক্যাপিটাল ভ্যালুর বিচারে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী অটোমোবাইলস ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি হচ্ছে আমেরিকার টেসলা কর্পোরেশন। ফোবর্স ম্যাগাজিনের সর্বশেষ তথ্যমতে, বিশ্বের প্রথম স্থানীয় অটোমোবাইলস কোম্পানি হিসেবে টেসলার মার্কেট ক্যাপিটাল ভ্যালু হচ্ছে ৫৬৫.৯৫ বিলিয়ন ডলার। তাছাড়া বিশ্বের দ্বিতীয় ও তৃতীয় শীর্ষ স্থানীয় অটোমোবাইলস কোম্পানি হিসেবে জাপানের টয়োটা মোটর কর্পোরেশনের ২৯৮.১৪ বিলিয়ন ডলার এবং চীনের বিওয়াইডি ৮৭.৫৪ বিলিয়ন ডলার মার্কেট ক্যাপিটাল ভ্যালু দেখানো হয়েছে। তথ্যসূত্র- রয়টার্স/ফোবর্স/উইকিপিডিয়া।

 

লেখক: সিরাজুর রহমান, সহকারী শিক্ষক, সিংড়া, নাটোর, বাংলাদেশ।

 

ডিবিসি/ এইচএপি

আরও পড়ুন