বাংলাদেশ, জেলার সংবাদ

চাঁদা না পেয়ে নেত্রকোণায় মসজিদের ইমাম ও তার স্ত্রীকে আ.লীগ নেতার ছেলে ও বহিষ্কৃত ছাত্রদল নেতার নির্যাতন

নেত্রকোনা প্রতিনিধি

ডিবিসি নিউজ

২১ ঘন্টা আগে
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

নেত্রকোণায় চাঁদা না পেয়ে মসজিদের ইমাম ও তার স্ত্রীকে রাতভর মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল! এই ঘটনার ফুটেজ ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তোলপাড় এমন ঘটনায় অপরাধীদের কঠোর শাস্তির দাবি ভুক্তভোগী ও স্থানীয়দের।

জানা গেছে, নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর উপজেলার বাকলজোড়া ইউনিয়নের সুতিয়াপাড়া নূরানি হাফেজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক এবং মসজিদের ইমাম ও খতিব হিসেবে হাফেজ আব্দুল্লাহ পাঁচ মাস ধরে কর্মরত ছিলেন ।

 

ঘটনার সূত্রপাত গত ২রা অক্টোবর। সেদিন রাতে মসজিদ কমিটিকে জানিয়ে তিনি তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে মাদ্রাসায় অবস্থান করছিলেন। রাত ২টার পর স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও তিনবারের মেম্বার আব্দুস সাত্তারের ছেলে পলাশ, বাকলজোড়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম, সৈয়দ মিস্ত্রির ছেলে রুবেল, এই তিনজন মিলে মোটরসাইকেল রাখতে মাদ্রাসার শ্রেণীকক্ষে স্থাপিত ইমাম সাহেবের অস্থায়ী রুমে প্রবেশ  করে।

 

পরে ইমাম সাহেবের কক্ষে মহিলা দেখতে পেয়ে তারা তার পরিচয় শনাক্তের জন্য ইমামকে চাপ প্রয়োগ করে। এ সময় ইমাম আব্দুল্লাহ মহিলাকে নিজের স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিলেও অভিযুক্তরা তাতে কোন কর্ণপাত না করে, উল্টো ১৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে। টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে ইমামের স্ত্রীর মোবাইল  ফোন কেড়ে নিয়ে ভিডিও  করে এবং স্ত্রীসহ তাকে মারধর করে। এ সময় মাদ্রাসার দুই শিক্ষার্থীকেও মারধর করে তারা।

 

সারারাত নির্যাতনের পর সেই ইমামকে ফজরের নামাজ আদায় করতেও দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ করেন তারা। পরে  সকাল বেলায় সুযোগ বুঝে ঘর থেকে বের হয়ে মসজিদে আসা লোকজনকে বিষয়টি জানানো হলে, তাদের সামনেই ইমামকে মারধর করা হয়।

 

পরবর্তীতে মসজিদ কমিটির কোষাধ্যক্ষ স্থানীয়দেরকে নিয়ে অভিযুক্তের বাবা স্থানীয়  আওয়ামী লীগ নেতা ও  মেম্বার আব্দুস সাত্তারের কাছে  বিচার দাবী করলে তিনি টালবাহানা শুরু করেন। ইমাম আব্দুল্লাহ স্থানীয়দের কাছে বিচার দিলেও অভিযুক্ত জহিরুল ইসলাম, ইউনিয়ন  ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় কোন প্রতিকার না পেয়ে অপমানিত ও লাঞ্ছিত  হয়ে মাদ্রাসার চাকুরী  ইস্তাফা দিয়ে তার বাড়ীতে চলে আসেন।

 
পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ঘটনার খবর ছড়িয়ে পরলে এলাকায় তোলপাড় শুরু  হয়।


এ ব্যাপারে দূর্গাপুর থানার ওসি  মাহমুদুল হাসান জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন  করেছে এবং  ১৮ই অক্টোবর বাদীর অভিযোগ আমলে নিয়ে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ইমামকে মারধর ও তাঁর স্ত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মো. জহিরুল ইসলাম (২৭) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।

 

এদিকে ঘটনার কয়েক ঘন্টা পরপরই ছাত্রদল নেতা জহিরুল ইসলামকে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
 

 

আরও পড়ুন