ক্যাসিনো চালানোর অনৈতিক প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিল ঢাকা মেরিনার ইয়ং ক্লাব।
ক্যাসিনো কেলেঙ্কারিতে মতিঝিল ক্লাব পাড়ায় রমরমাভাব কেটে তৈরি হয়েছে আতঙ্ক। একেরপর এক সিলগালা হচ্ছে রাজধানীর বিভিন্ন ক্লাব। তবে, মন্দের মধ্যে ভালোও আছে। যাদের গাঁয়ে নেই সেই কলঙ্ক। আজাদ স্পোর্টিংয়ের মতো মেরিনার্স ক্লাবও তারই উদাহরণ। ক্যাসিনো বসানোর প্রস্তাব এসেছিলো তাদের কাছেও। তবে, তাতে সারা না দিয়ে ঐতিহ্য ধরে রেখেছে মেরিনার ইয়ং ক্লাব।
স্বাধীনতা উত্তর প্রতিষ্ঠিত মেরিনার ইয়ং স্পোর্টিং ক্লাব। ক্যাসিনো থাবায় তটস্থ মতিঝিলের ক্লাবপাড়া যখন কর্তা শুন্য, তখন মেরিনার ইয়ং ক্লাবে গিয়ে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। ক্লাব সদস্যরা আছেন নিজ নিজ চেয়ারেই। অন্য সাধারণ দিনের মতোই কর্মব্যস্ত ক্লাবটি।
মেরিনার কর্তৃপক্ষের কাছে সরাসরি প্রশ্ন, মতিঝিলের ক্লাব পাড়ায় যখন ক্যাসিনোর টাকার ছড়াছড়ি, তখন মেরিনার ক্লাব এর বাইরে কেন? এমন প্রশ্নে মেরিনার ইয়ং ক্লাবের ট্রেজারার এস এম নাসিম রেজা বলেন, 'ক্লাবের সুনামের স্বার্থে আমরা কখনই জুয়া বা ক্যাসিনোর মতো অন্যকোনো অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে আপস করিনি। অনেকেই আমাদের প্রস্তাব দিয়েছে কিন্তু আমাদের সদস্যরা সে প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছে।
চলতি বছরই পার করতে হচ্ছে দেড় কোটি টাকার বাজেট। অথচ জৌলুসহীন একটি বিল্ডিংয়ের এই ক্লাব সেই অর্থ পায় কোথায়। এর জট খুললেন ক্লাবটির ট্রেজারারই।
এর জবাবে, মেরিনার ইয়ং ক্লাবের ট্রেজারার এসএম নাসিম রেজা বলেন, 'ধণাঢ্য ব্যক্তিদের কাছ থেকে আমরা অনুদান নিয়ে থাকি। এছাড়া, আমাদের ক্লাবের দোকান আছে এগুলি থেকে মাসিক অর্থ আসে।'
কোনো রাখ ঢাক না রেখেই ক্লাবে অবস্থানরত খেলোয়াড়দের কাছে জানতে চাওয়া মেরিনারে কোন জুয়ার আসর বসতে দেখেছে কি-না। খেলোয়াড়রা এমন কিছু তারা কখনও দেখননি এমনকি কখনও শুনতেও পাননি।
ওপরের তলায় খেলোয়াড়দের আবাসিক কক্ষে দেখা মিললো কয়েকজন ক্ষুদে ফুটবলারের, ক্যাসিনো ব্যবসার কারণে বন্ধ করে দেয়া আরামবাগ ক্লাবের এই ফুটবলারদের জায়গা দিয়েছে মেরিনার ইয়ং। ক্লাবপাড়ার বর্তমান পরিস্থিতি নাকি তাদেরও ছুঁয়ে গেছে জানালেন, মেরিনার কর্তা।
মেরিনার ইয়ং ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক (স্পোর্টস) জাহিদ হোসেন জানান, সমগ্র পাড়ায় একটা আতঙ্কজনক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। তাই তাদের ক্লাবে থাকা খেলোয়াড় এবং আশ্রয় নেয়া অন্য ক্লাবের খেলোয়াড়দের সবসময় চোখে চোখে রাখা হচ্ছে। যেন তারা কোনো বিপদে না পড়ে।
১০৩ জন স্থায়ী সদস্য ও স্থানীয় ধণাঢ্য ব্যক্তিবর্গের চাঁদা, সেই সঙ্গে ক্লাবের ভাড়া দেয়া দোকান ও প্রেস থেকে পাওয়া অর্থে চলে মেরিনার ইয়ং ক্লাব। ফুটবল বাদে ১০টি খেলায় অংশ নেয়া মেরিনার ইয়ং ক্লাবের অর্জনও ঈর্ষণীয়। তাই যা উদাহরণ হতে পারে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত অন্য ক্লাবগুলোর।