দেশে ১০০ জনের মধ্যে ৪৩ জনই এখন দারিদ্রসীমার নিচে।
করোনা মহামারিতে উপার্জন হারিয়ে দেশে গরিব মানুষের সংখ্যা এখন দ্বিগুণ। একটি বেসরকারি গবেষণা বলছে, দেশের একশো জনের মধ্যে ৪৩ জনই দারিদ্রসীমার নিচে অবস্থান করছে। তাদের জন্য মাসে দরকার ১১ কোটি টাকার নগদ সহায়তা। এরই মধ্যে ৫০ লাখ পরিবারকে সরাসরি অর্থ সহায়তা দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। তবে এর পরিমাণ আরো বাড়ানোর পাশাপাশি খাদ্য সহায়তা চালু রাখার পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা।
রাজধানীর কল্যাণপুরে লন্ড্রির ব্যবসা করেন, কামরুল ইসলাম। করোনার প্রকোপ শুরু হওয়ার পর থেকেই তার উপার্জন বন্ধ। অর্থকষ্ট এখন চরমে। তিনি বলেন, আমাদেরকে কেউই তেমন কোন সাহায্য দেয়নি। আমার দুইটা সমিতিতে কিছু টাকা জমানো ছিল কোরবানি দেয়ার জন্য সে টাকাও আমি ভেঙ্গে ফেলেছি।
কিন্তু যারা কোনভাবেই পারছেননা তারা এখন রস্তায় বসে আছেন কিছু পাওয়া আশায়। স্কুলের ছাত্রও এখন সাহায্য প্রার্থী। ঢাকার গুলশান বাড্ডার সংযোগ সড়কে কিন্তু গত দুমাস ধরে এমন কিছু মানুষদের বসে থাকতে দেখা যায় যাদের আগে দেখা যায়নি
গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিপিআরসি এবং উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান ব্র্যাকের একটি যৌথ গবেষণা বলছে, দেশে নুতন করে গরিব হয়ে পড়েছেন প্রায় ২২.৯ শতাংশ মানুষ। সামগ্রিকভাবে দেশে মোট জনগোষ্ঠীর ৪৩% শতাংশ মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করছে। এর মধ্যে গ্রামে ৪ কোটি ২৯ লাখ ৯৪ হাজার এবং ২ কোটি ৭০ লাখ ২৮ হাজার জন।
এসব মানুষের ক্রয়ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে প্রতিমাসে ১১ হাজার কোটি টাকা সহযোগিতা করার পরামর্শ এসেছে গবেষণা থেকে। যদিও এর আগেই ৫০ লাখ পরিবারকে আড়াই হাজার টাকা করে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। করোনাকালের দারিদ্র নিয়ে গবেষণা করা আরেকটি প্রতিষ্ঠান সানেমের পরামর্শ, সরকারের সহযোগিতার পরিসর বাড়াতে হবে।
সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলেন, বাজার ব্যবস্থায় যেহেতু ধ্বস পড়েছে তাই সরকারের উচিত নগদ টাকা দিয়ে দরিদ্রের কিছু সহায়তা করা।যারা নতুন করে দরিদ্র হচ্ছে তাদের নিয়েই সরকারের ভাবা উচিত। তাই খাদ্য সহায়তা এবং অর্থ সহায়তা এই দুইটিই কার্যকর রাখতে হবে।
গরিবদের দেয়া সরকারি সহযোগিতার ন্যায্য বন্টন নিশ্চিত করতে জাতীয় পর্যায়ে মনিটরিং কমিটি করারও পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা।