চিকিৎসকদের বিরামহীন পরিশ্রমে পাল্টে গেছে করোনাভাইরাসের কেন্দ্রস্থল চীনের পরিস্থিতি। কমে এসেছে করোনায় মৃতের সংখ্যা, প্রতিদিনই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন অনেকে।অপরদিকে ইতালির অবস্থা দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতে দেশটির চিকিৎসকদের ভিডিও কনফারেন্সে ভাইরাসটি মোকাবিলায় নানা পরামর্শ দিচ্ছেন চীনা চিকিৎসকরা।
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বিশ্বের কাছে এখন বড় উদাহরণ চীন। ডিসেম্বর থেকে মার্চ, এই কয়েকমাসে আক্রান্তদের বিরামহীনভাবে সেবা দিয়েছেন চীনা চিকিৎসক ও নার্সরা। তিন হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হলেও বর্তমানে দেশটির করোনা পরিস্থিতি স্থিতিশীল।
অপরদিকে ইউরোপের দেশগুলোতে করোনা পরিস্থিতি বিপর্যয়ের দিকে। সবচেয়ে বিপর্যস্ত অবস্থায় বর্তমানে ইতালি। উন্নত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা থাকার পরও প্রতিদিন বাড়তে থাকা মৃত্যুতে দিশেহারা চিকিৎসকরা।
এমন পরিস্থিতিতে ইতালির পাশে দাঁড়িয়েছে চীনা চিকিৎসকরা। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অধিক সংখ্যক রোগী, বিশেষ করে বয়স্কদের কীভাবে সেবা ও চিকিৎসা দিয়েছেন এই বিষয়ে ইতালির চিকিৎসকদের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন তারা।
ইতালিতে বয়স্কদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় রোগ নির্ণয়, সম্ভাব্য জটিলতাসহ চিকিৎসাসেবার নানা দিক নিয়ে আলোচনা করেন তারা।
সেবা দিতে গিয়ে কি ধরনের সমস্যায় পড়ছেন তা নিয়ে আলোচনা করেন ইতালির চিকিৎসকরা।
ইতালি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটের স্বাস্থ্য ও বিজ্ঞান বিভাগ উপ-পরিচালক ফেব্রিজিয়া লাতানজিও জানান, 'উহানে করোনা রোগীদের খুব ভাল সেব দিচ্ছেন চীনা চিকিৎসকরা। তাদের কাছ থেকে অনেক কিছুই শিখলাম। তারা করোনা আক্রান্ত বয়স্ক রোগীদের কীভাবে ট্রিটমেন্ট দিয়েছে এই বিষয়ে আমাদেরকে জানান। সেই সাথে চিকিৎসা দেয়ার সময় আমারা কোন কোন বিষয় মাথায় রাখব তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।'
অন্যদেশগুলোর সঙ্গে নিজেদের অভিজ্ঞতা বিনিময়কে নৈতিক দায়িত্ব হিসেবেই দেখছেন চীনা চিকিৎসকরা।
উহান হাসপাতালের রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের পরিচালক লুও গোয়াংওয়ে বলেন, আমাদের সবার লক্ষ্য একটাই, করোনাকে প্রতিহত করা, মানুষকে সুস্থ করে তোলা ও বাঁচানো। চেষ্টা করেছি রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে জটিল মুহূর্তগুলো এখানের চিকিৎসকদের জানাতে।সেই সঙ্গে বিভিন্ন পরামর্শও দিয়েছি, আশা করি তারা উপকৃত হবেন।'
ইতালির পাশাপাশি জার্মান মেডিক্যাল ইনস্টিটিউটের বিশেষজ্ঞরাও কনফারেন্সে অংশ নিচ্ছেন।
এদিকে ইতালিতে মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় করোনা মোকাবেলায় দেশটিকে সহযোগিতা করতে পাশে দাঁড়িয়েছে কিউবা। ইতালির সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত লোমবার্দিতে পৌঁছেছে ৩৬ চিকিৎসক, ১৫ নার্স ও একটি লজিস্টিক এক্সপার্ট টিম।