স্বাস্থ্য

চিকিৎসক মায়ের জন্মদিনের কেক বানাল শিশু নিসর্গ

ডিবিসি নিউজ ডেস্ক

ডিবিসি নিউজ

শনিবার ২৩শে মে ২০২০ ০৮:৪৩:১৪ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

ইউটিউব দেখে করোনা চিকিৎসক মায়ের জন্মদিনের কেক বানিয়ে হাসপাতালে গেছেন নয় বছরের ছোট্ট শিশু নিসর্গ। গর্ভে সন্তান নিয়ে সেবা দিতে লড়ছেন চিকিৎসক মা।কাছে গেলেও সন্তানকে ছুঁতে পারছেন না অনেকে। দেশের করোনাযুদ্ধের প্রথমসারির যোদ্ধা চিকিৎসকদের রয়েছে এমন হাজারো গল্প।

বড় কঠিন সময়, করোনাভাইরাস শুধু আতঙ্কই ছড়ায়নি, বিচ্ছিন্ন করেছে মানুষকে মানুষের কাছ থেকে। এমনকি সন্তানকে তার মায়ের কাছ থেকে।ডাক্তার সাবরিনা শাহরিন স্বর্ণার এই ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় তুলেছে। নয় বছরের নিসর্গ হয়তো বোঝেনা কোভিড নাইন্টিন কি, কিন্তু এটুকু বোঝে মায়ের কাছে যাওয়া যাওয়া যাবেনা। তাই মায়ের জন্মদিনে ইউটিউব দেখে কেক বানিয়ে চমকে দিয়েছে নিসর্গ।গাড়ির বন্ধ গ্লাসের ভেতর থেকেই উদযাপন করেছে মায়ের জন্মদিন।

ডা. সাবরিনা শাহরিন স্বর্ণার ছেলে নিসর্গ বলেন,'আমি আমার মাকে অনেক মিস করছি। মা আরও ১৪ দিন হোটেলে থাকবে তারপর বাসায় আসবে।' ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নেফ্রোলজি বিভাগের আইএমও ডা. সাবরিনা শাহরিন স্বর্ণা ছেলের দেয়া উপহারে অভিভূত। তিনি বলেন, 'আমার ছেলেটা এত ছোট। সে একা একটা কেক বানিয়ে নিয়ে আমার কাছে আসতে পারবে, আমি ভাবিনি। এই যুদ্ধটা যখন সফলভাবে শেষ করতে পারবো। বাচ্চারা বড় হবে। তখন তারা তাদের বাবা মায়ের জন্য গর্ববোধ করবে।'

আর এই অন্তঃসত্ত্বা মায়ের গল্পটা একটু অন্যরকম। করোনা আক্রান্তদের সেবা দিতে গিয়ে কোভিড নাইনন্টিনে আক্রান্ত হন আটমাসের অন্তঃসত্ত্বা জেরিন লাকি। করোনার সাথে প্রায় ২৫ দিন লড়াই করে সুস্থ হয়ে আবার কাজে যোগ দিয়েছেন তিনি।

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সিনিয়র স্টাফ নার্স জেরিন লাকী বলেন, 'এটা ভাবলে খুবই ভালো লাগে যে, আমার ভবিষ্যত শিশুটি জানতে পারবে যে, তার মা তাকে গর্ভে নিয়ে করোনা যুদ্ধে জয়ী হয়েছে।'

করোনা আক্রান্ত চিকিৎসক আল আমিন সেতু বাসায় চিকিৎসা নিয়েছেন।একই বাসায় থাকাতে সাড়ে চার বছরের স্পন্দনের বাবার কাছে যাওয়ার আকুতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সবার নজর কাড়ে।

শহীদ সোহরাওয়াদী হাসপাতালের চিকিৎসক কামরুল আক্তার সঞ্জু। প্রতিদিন ডিউটি করতে হয় বলে বাসার নীচতলার একটি রুমে আলাদা থাকেন।  দ্বিতীয় তলায় থাকা পাঁচ বছরের সন্তান আইয়ান লোহার গেটের ফাঁক দিয়ে বাবার হাতটা ধরার চেষ্টা করেও ধরতে পারেনা।  তাই বাবার জন্মদিনে কাঁচা হাতের আচড়ে আঁকা দুটি ছবি উপহার দিয়েছে।

শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. এসএম কামরুল আক্তার সঞ্জু বলেন, 'ও তার আবেগ দিয়ে বাবার জন্য প্রতিদিন ছবি একে পাঠায়। এটা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া।'

এরকম হাজার হাজার যোদ্ধাদের ত্যাগের কাহিনী যেকোন মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে যাবে।  তবে, কোভিড নাইন্টিন এর এই যুদ্ধ জয় করে দেশের প্রথমসারির যোদ্ধারা ফিরবেন পরিবার পরিজনের সান্নিধ্যে, এটাই প্রার্থণা সবার।

আরও পড়ুন