দরজায় কড়া নাড়ছে বড়দিন। আজ মধ্যরাত থেকেই সেই মাহেন্দ্রক্ষণ, যিশুখ্রিষ্টের জন্মোৎসব। ভালোবাসা, ক্ষমা, মিলন, সৌহার্দ্য-সম্প্রীতি ও মুক্তির বার্তা নিয়ে পৃথিবীতে এসেছিলেন যিশুখ্রিষ্ট। খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, বড়দিনে যিশুখ্রিষ্ট এই বার্তাই বারবার দিতে চান।
খ্রিষ্টধর্ম মতে, ২০০০ বছরেরও আগে ইসরায়েলের বেথলেহেম নগরে এক গোয়ালঘরে জন্মেছিলেন যিশুখ্রিষ্ট। খ্রিষ্ট বিশ্বাস অনুযায়ী, ঈশ্বরের বিশেষ পরিকল্পনা ও আশির্বাদে মারীয়া নামে এক কুমারীর গর্ভে তাঁর জন্ম।
যিশুখ্রিষ্ট নামের অর্থ পরিত্রাতা। পবিত্র বাইবেল অনুসারে, মানুষকে পুণ্যের পথে পরিচালিত করতে যিশুকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছিলেন ঈশ্বর। যিশুর জন্মের বহু বছর আগে থেকেই পৃথিবীতে তাঁর আগমনবার্তা বিভিন্ন প্রবক্তার মাধ্যমে ঈশ্বর মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছিলেন।
যিশুখ্রিষ্টের জন্মোৎসব অর্থাৎ বড়দিনের প্রধান তাৎপর্য আধ্যাত্মিক। তাইতো পাপস্বীকার, প্রায়শ্চিত্ত ও প্রার্থনায় খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের প্রস্তুতি সেরকমই।
হাসনাবাদ ধর্মপল্লীর পুরোহিত ফাদার আবেল রোজারিও বলেন, 'যিশু আসেন নবজাতক শিশু হয়ে, তবে মানবিকভাবে না। তিনি আসেন আধ্যাত্মিকভাবে আমাদের আত্মায়। সেই কারণে আধ্যাত্মিক প্রস্তুতির দরকার, খুব দরকার।'
বৈষয়িক প্রস্তুতিরও কমতি নেই। গির্জাগুলোর সজ্জা উৎসবসম। আর, বাসা বাড়িতেও উৎসবের রঙ। এসব প্রস্তুতি বৈষয়িক হলেও এর রয়েছে অনেক সামাজিক গুরুত্ব।
বাংলাদেশ খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও জানান, 'বাংলাদেশে হাজার বছর ধরে হিন্দু, বৌদ্ধ, মুসলিম ও খ্রিস্টান আমরা একসঙ্গে বসবাস করে আসছি। বড়দিন আমাদের তাৎপর্যপূর্ণ দিন। এ দিনে আমরা সবাই মিলে একসঙ্গে আনন্দ উৎসব করবো।'
সব মিলিয়েই বড়দিনের তাৎপর্য সার্বজনীন, যা বিরাজ করুক সর্বদা, এমনটাই চাওয়া সবার।