করোনাভাইরাসের আক্রমণ থেকে মুক্তি পেতে ১৫ মিনিট পরপর পানি পান কিংবা আদা-রসুন খাওয়ার পরামর্শ ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এসব তথ্যের কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। না জেনে অনেকেই বিশ্বাস করছেন এসব, যা মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
করোনাভাইরাস চারদিন গলায় থাকে। ফুসফুসে পৌঁছানোর আগেই প্রচুর ভিনেগার বা লবন মিশ্রিত পানি পান করলে অসুখ সেরে যায়। ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে এ তথ্য। না জেনে অনেকে এ পরামর্শ মেনেও চলছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পানি পান করা এবং হাইড্রেটেড থাকা স্বাস্থ্যকর। তবে ১৫ মিনিট পরপর পানি পান করে সংক্রমণ ঠেকানো যাবে, এমন তথ্যের কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।
করোনা শনাক্তে এখন জনপ্রিয় মিথ ১০ সেকেন্ড শ্বাস আটকে রেখে স্বাস্থ্যপরীক্ষা। অনেকেই বলছেন, এ সময়ের মধ্যে কাশি হলেই বুঝতে হবে করোনা পজিটিভ, যা সম্পূর্ণ ভুল তথ্য।
কোনও বস্তুর ওপরে ভাইরাসের স্থায়িত্ব নিয়েও রয়েছে ভুল ধারণা। বিভিন্ন গবেষণা থেকে দেখা গেছে, ভাইরাস ধাতু, প্লাস্টিক বা কাচের ওপরে দুই ঘণ্টা থেকে নয়দিন পর্যন্ত থাকতে পারে। যদিও ৭২ ঘণ্টা পরেই ভাইরাসের সংক্রমিত করার ক্ষমতা অনেক কমে যায়।
দিনরাত কাজ করেও এখনো করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কার করতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। এরইমধ্যে ভারতে করোনা সারাতে গোমূত্র পান করেছেন অনেকে। এভাবে আক্রান্ত রোগী সুস্থ হওয়ার কোন প্রমাণ চিকিৎসা বিজ্ঞানে না থাকলেও পশ্চিমবঙ্গসহ অনেক এলাকাতেই অসুস্থ হয়েছেন।
আদা ও রসুন স্বাস্থ্যকর এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু আদা চা পান ও রসুন খেয়ে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করা যায় না।
ফ্লু ভাইরাস শরীরের বাইরে গ্রীষ্মের তাপে বেশিক্ষণ টিকে থাকতে পারে না। তবে তাপমাত্রা করোনাভাইরাসের ওপর কী প্রভাব ফেলে তা জানতে এখনো গবেষণা চলছে। ফলে আইসক্রিম খাওয়া যাবে না কিংবা করোনা ঠেকাতে শরীর উষ্ণ রাখতে হবে এসব তথ্যেরও কোনয়ও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।
মনে রাখতে হবে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ জ্বর, শুকনো কাশি ও শ্বাসকষ্ট। সংক্রমণ এড়াতে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা, পরিচ্ছন্ন থাকা এবং বার বার হাত ধোঁয়ার কোনও বিকল্প নেই।