রিসোর্টকাণ্ডের পরপরই আরেক নারীর সঙ্গে সম্পর্ক প্রকাশ্যে আসলে মামুনুল হককে বহিষ্কারের প্রস্তাব ওঠে হেফাজতে ইসলামের বৈঠকে। মামুনুলের অনুসারীদের প্রতিক্রিয়া এড়াতে এখনই বহিষ্কার না করে তার বিয়ে-বহির্ভূত সম্পর্ক অনুসন্ধানে তিন সদস্যের কমিটি করে দিয়েছে কওমী মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠনটি। সম্প্রতি গুরুত্বপূর্ণ পাঁচ হেফাজত নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এসব তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে সহিংসতা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে ফের উগ্রমূর্তির জানান দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। তাণ্ডব শেষে রিসোর্টে অবকাশযাপনে যান হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক। সঙ্গে এক নারী থাকায় স্থানীয়দের প্রশ্নের মুখে পড়েন তিনি। জনরোষ এড়াতে ওই নারীকে নিজের দ্বিতীয় স্ত্রী বলে পরিচয় দেন। যদিও প্রথম স্ত্রীর কাছে বলেছেন ওই নারী আরেকজনের স্ত্রী। এই বিতর্কের মধ্যেই মামুনুলের আরেকটি সম্পর্ক প্রকাশ্যে এসেছে।
এই ইস্যুতে চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় জরুরি বৈঠকে হেফাজতের শীর্ষ নেতারা একমত হন যে, মামুনুলের নৈতিক স্খলন হয়েছে। তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের প্রস্তাব দেন আজিজুল হক ইসলামাবাদী। সায় দেন বেশিরভাগ নেতা। তবে বহিষ্কার করলে মামুনুল-অনুসারীদের তীব্র প্রতিক্রিয়া হতে পারে বলে কঠোর না হয়ে তার বিয়ে-বহির্ভূত সম্পর্ক অনুসন্ধানে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে দেন হেফাজত আমির জুনায়েদ বাবুনগরী। নাশকতার মামলায় আটক হেফাজতের পাঁচ নেতাও গোয়েন্দা পুলিশকে এসব তথ্য দিয়েছেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশ গোয়েন্দা বিভাগের যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, 'মামুনুলের এ কাণ্ডে তারা হতাশ। এবং তার এই কর্মকাণ্ডে অনেকেই আমাদের কাছে উষ্মা প্রকাশ করছেন। এটা তো আর অন্যভাবে আনা যাবে না। এটা আমাদের কাছে তারা স্বীকার করেছে।'
হেফাজতের সাম্প্রতিক তাণ্ডবে জঙ্গিরাও অংশ নিয়েছিল জানিয়ে পুলিশ বলছে, ধর্মান্ধ গোষ্ঠীকে একবিন্দু ছাড় দেয়া হবে না।
মাহবুব আলম আরো জানান, 'সাম্প্রতিক নাশকতায় যারা যারা জড়িত ভিডিও ফুুটেজ ও তাদের অন্যান্য কর্মকাণ্ড দেখে তাদেরকে চিহ্নিত করেছি এবং আইনত ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি। হেফাজতকে ঘিরে ও তাদের দেখে আরো অনেক গোষ্ঠী যেমন জঙ্গি গোষ্ঠীও দেখেছে এখানে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করা যায়। ফলে নাশকতার এই জায়গাতে তারাও অংশগ্রহণ করেছে বলে আমরা বুঝতে পেরেছি। আমরা এই জায়গাটায় কাজ করছে। অতি শীঘ্রই দেখবেন আরো কিছুু গ্রেপ্তার হবে।'
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার এড়াতে মাদ্রাসায় অবস্থান নিয়েছে সহিংসতা ও নাশকতায় জড়িত হেফাজত নেতাদের অনেকেই। এ কারণে করোনার দ্বিতীয় আঘাতেও নির্দেশনা অমান্য করে মাদ্রাসা খোলা রাখা হয়েছে।