বাংলাদেশ, চাকরি, জাতীয়, অর্থনীতি, প্রবাস, নারী

‘সৌদি আরবে নারীকর্মী পাঠানো বন্ধের সময় আসেনি’

ইশরাত জাহার ঊর্মি

ডিবিসি নিউজ

বৃহঃস্পতিবার ৩১শে অক্টোবর ২০১৯ ০৯:৫৯:৫৪ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

দশমাসে শুধু সৌদী আরব থেকেই ৪৮জন নারীকর্মীর মৃতদেহ এলেও এখনই সেখানে নারীকর্মী পাঠানো বন্ধের কথা ভাবছে না সরকার।

নারীকর্মীদের দক্ষ করে এবং যথেষ্ট সুরক্ষার ব্যবস্থা করে সৌদী আরবে পাঠানোর পক্ষে বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।

সেখানে আর কোন নারী গৃহকর্মী যাতে নির্যাতনের শিকার না হন সেজন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।

সৌদি আরবে কাজের জন্য গিয়ে গত চার বছরে লাশ হয়ে দেশে ফিরেছেন ১৫২জন।  আর বেতন না পাওয়া, যৌন নির্যাতনসহ অন্যান্য নির্যাতন সয়ে প্রাণ নিয়ে দেশে ফিরেছেন ৩৯০জন।

এমনই একজন নাজমা ভাগ্য ফেরাতে ১০ মাস আগে সৌদী আরব গিয়ে মারা যাওয়ার দু’দিন আগেও ভিডিও কলে নির্যাতনের বর্ণনা দেন।  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে নাজমার সেই ভিডিও কলটি অনেক আলোচনারও জন্ম দেয়।

পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ দেয়ার কথা বলা হলেও এক বাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় নাজমাকে।  সেখানে তার উপর চলে শারীরিক ও যৌন নিপীড়ন।  মৃত্যুর একমাস পরে তার মরদেহ আসে দেশে।

বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের তথ্যানুযায়ী, মরদেহ আসা নারীদের ১১ ভাগ সেখানে আত্মহত্যা করেন।

এতোকিছুর পরও সৌদী আরবে নারীকর্মীদের যেতে কোনো বাধা নেই বলে মনে করেন সেখানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ।  তিনি এসব ঘটনার দায় চাপান জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর উপর।

গোলাম মসীহ বলেন, "নারী শ্রমিক এখানে আসার কোনো বাধা নেই।  এবং এদের প্রয়োজন আছে, আমাদেরও চাকরির প্রয়োজন আছে। প্রত্যেকটা মেয়েকে নিতে হলে দুই হাজার ডলার দেয়।  মানে প্রায় এক লাখ সত্তর হাজার টাকা। তাদের এক্সপেকটেশান থাকে যে মেয়েটা সব কাজে দক্ষ ও মানসম্মত হবে।  তাদের ট্রেনিংয়ের দায়িত্ব যাদের, তারা যদি ট্রেনিং না দেয় তাহলে তারা দায়ী।"

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী মনে করেন, এখনও দেশটিতে কর্মী পাঠানো বন্ধ করার সময় আসেনি, তাছাড়া কর্মীরা নিজের ইচ্ছায় সেখানে যান।  তাদেরকে আরও দক্ষ করে পাঠানোর জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমেদ বলেন, "শারীরিক হোক, মানসিক হোক, যে কোনো নির্যাতন আমরা মেনে নিবো না।  আমরা এটা হওয়ার আশাও করি না।  নতুন চিন্তার সময় বোধ হয় এখনও আসে নাই।  এটা আমার বিশ্বাস, কারণ আমরা যদি বর্তমান অবস্থাটা শুধরে নিতে পারি, যেমন- প্রশিক্ষণের ব্যাপারে আমরা ইতোমধ্যে পদক্ষেপ নিয়েছি।"

আগামী ২৬শে নভেম্বর বাংলাদেশ-সৌদী আরব যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে এতো নারী নির্যাতনের প্রসঙ্গটি জোরালোভাবে তোলা হবে বলে জানান তিনি।

আরও পড়ুন