চা বাগানে রোদ–বৃষ্টি–ঝড় উপেক্ষা করে চা শিল্পের চাকা সচল রাখেন নারী শ্রমিকরা। কর্মক্ষেত্রে সুযোগ-সুবিধার অভাব, স্বাস্থ্যসেবা, আবাসন সংকটসহ নানা সমস্যা দূর হয়নি আজও। প্রাপ্য অধিকার থেকেই বঞ্চিত তারা। তবে মালিকপক্ষ বলছে ভিন্ন কথা। আর শ্রম দপ্তর বলছে, অভিযোগ পেলে নেয়া হবে ব্যবস্থা।
মৌলভীবাজারের ৯২টি চা বাগানে কাজ করেন প্রায় এক লাখ শ্রমিক। তাদের ৬০ ভাগই নারী। কিন্তু দু'টি পাতা আর একটি কুঁড়ি উঠে আসে যাদের হাত দিয়ে সেই নারীরাই রয়ে গেছেন অধিকার বঞ্চিত। কর্মক্ষেত্রে নেই স্বাস্থ্য সুবিধা। নেই বিশ্রামাগার বা টয়লেটের ব্যবস্থা। রোদ, বৃষ্টি, ঝড়েও প্রতিদিনই তুলতে হয় ২০ থেকে ২৫ কেজি চা-পাতা।
চা বাগানগুলোতে নারী সর্দার নিয়োগ দেয়ার কথা অনেকবার বলা হলেও তা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। শ্রমিক অধিকার আদায়ে যারা কাজ করছেন তারা বলছেন, নারীর আর্থ সামাজিক উন্নতি না হলে এই খাতে সুফল আসবে না। তবে বাগান মালিকদের মুখে ভিন্ন সুর। তারা বলছেন, শ্রমিকদের সুযোগ-সুবিধা দিন দিন বাড়ানো হচ্ছে।
জাগরণ যুব ফোরামের সভাপতি মোহন রবিদাস বলেন, 'চমে মাত্রার অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যে এ চা উৎপাদনে কাজ করে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে চা কোম্পানি যেগুল আছে তাদের কোন নজর নেই।'
ক্লোনেল চা বাগানের মালিক সৈয়দ মনসুরুল হক বলেন, 'বাসস্থানের একটা নিশ্চয়তা আছে যা কোম্পানি থেকে দেয়া হয়। পাশাপাশি কোম্পানির খরচে আমরা চট্টগ্রাম ও সিলেটে পাঠিয়ে থাকি।'
চুক্তি অনুয়ায়ী চা শ্রমিকরা অধিকার বঞ্চিত হচ্ছেন কি-না তা দেখতে বাগান পরিদর্শন করা হয় বলে জানান জেলা শ্রম দপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নাহিদুল ইসলাম। চুক্তি বা আইন ভঙ্গের অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস তার।
উপ-পরিচালক জানান, 'শ্রমিকদের চুক্তি বাস্তবায়নে যদি কোন প্রতিবন্ধকতা বা ব্যর্থতা থাকে, সেক্ষেত্রে শ্রমিকরা যখনই আমাদের কাছে বিরোধ হিসেবে নিয়ে আসেন, আমরা তা দ্বিপক্ষীয় সমাধান করে দেই।'
শুধু আশ্বাস নয়, কর্মক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হবে নারী শ্রমিকদের অধিকার; এমন প্রত্যাশা মৌলভীবাজারের চা শ্রমিকদের।