৪ কোটি টাকার হিসাব না পেয়ে মামলা করতে যাচ্ছে দুদক।
অবৈধ সম্পদ বৈধ করতে নানা ফন্দি করেছেন টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার দাশ। শ্বশুড় এবং স্ত্রীর নামে অবৈধ সম্পদ গড়েও পার পাচ্ছেন না প্রদীপ দম্পতি। প্রায় ৪ কোটি টাকার সম্পদের হিসাব না দেখাতে পারায় মামলা করতে যাচ্ছে দুদক। সেই সাথে ব্যাংক অ্যাকাউন্টসহ সম্পদ জব্দ করতে আইনি প্রক্রিয়াও শুরু করবে সংস্থাটি।
নথিপত্রে চট্টগ্রাম কোতয়ালী থানার পাথরঘাটায় ছয় তলার এ বাড়িটি এখন টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশের স্ত্রী চুমকির। ২০১৩ সালে এ বাড়িটি চুমকিকে তার বাবা দানপত্র করেছেন। যদিও তার দু'ভাই ও এক বোনকে বাবা এমন কোনো সম্পত্তি দান করেননি।
দুদকের অনুসন্ধানে মিললো, এসবই প্রদীপের অবৈধ সম্পদ বৈধ করার কৌশল ছিলো। বাড়িটির জমি ২০০৬ সালে শ্বশুড়ের নামেই কিনেছেন প্রদীপ। পরে ছয়তলার বাড়ি হয়েছে তারই টাকায়। এরপর শ্বশুড়ের নামে থাকা বাড়িটি তার স্ত্রীর নামে দান হিসেবে দেখানো হয়েছে ।
অনুসন্ধান বলছে, ২০১৪-১৫ কর বছরে প্রদীপের স্ত্রী চুমকি মৎস্য ব্যবসা থেকে দেড় কোটি আয় দেখিয়েছেন। যার কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। এছাড়া চুমকি আয়কর নথিতে কমিশন ব্যবসা থেকে উপার্জনের খাত দেখালেও এরকম কোনো ব্যবসার লাইসেন্স, সরকারি কর্মকর্তার স্ত্রী হিসেবে ব্যবসা করার অনুমতিপত্র, ব্যাংক হিসাবের লেনদেনসহ কোনো প্রামান্য নথি দেখাতে পারেনি।
প্রদীপ কুমার দাশ স্ত্রীর নামে বিভিন্ন কৌশলে সম্পদ বৈধ করার চেষ্টা করলেও ৩ কোটি ৯৫ লাখ টাকার সম্পদের কোনো উৎসই দেখাতে পারেননি। এ কারণে প্রদীপ দম্পতির বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ করা প্রতিবেদন দুদকের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয় থেকে প্রধান কার্যালয়ে পেশ করা হয়েছে। কমিশনের অনুমোদন মিললেই হবে মামলা।
দুদক কমিশনার ড. মোজাম্মেল হক খান বলেন, অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা আমাদেরকে প্রতিবেদন দিয়েছেন। তবে যদি অনুসন্ধানের বক্তব্য কমিশন কর্তৃক গৃহীত হয় তখন পরবর্তী ধাপ হচ্ছে তার বিরুদ্ধে মামলা হবে।
ব্যাংক অ্যাকাউন্টসহ অবৈধ সম্পদ জব্দে আইনি ব্যবস্থাও নিতে পারে দুদক। দুদক কমিশনার বলেন, তার এই অর্জিত সম্পদগুলো যদি মামলাতে আসে আর সেটি যদি আদালতে প্রার্থনা করা হয় যে সে এই সম্পত্তিগুলো যেন ভোগ, বিক্রি বা হস্তান্তর করতে না পারে। তাহলে আদালত সে অনুমতি দিলে আমরা তা অনুযায়ী ব্যবস্থা নিব।
ভারতের আগরতলা, বারাসাত ও গৌহাটিতে প্রদীপের বাড়ি থাকার কথা শোনা গেলেও প্রাথমিক অনুসন্ধানে তার দালিলীক প্রমাণ এখোনো মেলেনি । দুদকের কর্মর্কতারা মনে করেন , মামলার পরবর্তী তদন্তে প্রদীপ দম্পতির দেশে-বিদেশে আরো সম্পদ বেরিয়ে আসতে পারে।