বিশ্বের সেরা ঘড়ির বাজার মানেই সুইজারল্যান্ড। গুণগত মান, আভিজাত্য ও উদ্ভাবনী প্রযুক্তিই বিশ্বের সব প্রান্ত থেকে এগিয়ে রেখেছে সুইস ঘড়িকে।
প্রতিটি ঘড়ি যেন এক একটি শিল্পকর্ম। ধাতব ক্যানভাসে তুলির নিপুণ আঁচড় খেলা করে এখানে। মেকানিক্যাল বা যান্ত্রিক ঘড়ি তৈরি হয় শিল্প ও শিল্পীর সার্থক সমন্বয়ে। শতাধিক যন্ত্রাংশের সন্নিবেশে নির্মাণের পর নিখুঁত সময় দেয়ার পরীক্ষা। তাতে সফল হলে ছাড়পত্র মেলে ক্রেতার কাছে যাবার।
জেনেভা ও জুরিখ শহরের মূল সড়ক মানেই যেন ঘড়ির দোকান। এই সময়ে সবচেয়ে বেশি চোখে পড়বে চলচ্চিত্রে ব্রিটিশ গুপ্তচর জেমস বন্ডের ব্যবহৃত ঘড়ির বিজ্ঞাপন। সুইস লাক্সারি ঘড়ি নির্মাতা ওমেগা তৈরি করেছে টাইটেনিয়াম কেসের এই স্পাই ওয়াচ। বিক্রি হচ্ছে ৭ লাখ ২০ হাজার ৯০০ টাকায়।
ফেডারেশন অব দ্য সুইস ওয়াচ ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট জিয়েন ড্যানিয়েল বলেন, ‘সুইজারল্যান্ডে ঘড়ি মানে, দামী বা বিলাসী পণ্য এমন নয়। বিশ্ববাসীর কাছে এটি সুইসদের শৈল্পিক চেতনা তুলে ধরে’।
সুইস ঘড়ির অভিজাত শ্রেণিতে প্যাটেক ফিলিপ্পে, রোলেক্স, বিগ্রুয়েট, জেনিথদের জয়জয়কার। দেড় লাখ সুইস ফ্রাঁ’র থেকেও বেশি দামে ঘড়ি মিলবে এখানে। তেমনি মধ্যবিত্তের নাগালে আছে সাশ্রয়ী দামের টিজট, হ্যামিল্টন ও ভিক্টরিনক্স, ফ্রেডরিক কনসট্যান্টের মতো ব্র্যান্ড। এসব ঘড়ি মিলবে ১০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকার মধ্যে।
বেশিরভাগ সুইস ঘড়িতেই থাকে দুই বছরের ওয়ারেন্টি। সমস্যা হলে বিশ্বের যে কোনো দেশের আউটলেট থেকে বদলে নেয়া যাবে। তবে, কোনো কোনো অভিজাত ব্র্যান্ডে এই সুবিধা মিলছে ৫ বছর পর্যন্ত। স্মার্টওয়াচের বিপ্লব সুইস ঘড়ির চাহিদা কমিয়েছে অনেকটাই। তাই বেশ ক'বছর ধরেই বিক্রি কিছুটা কম। তারপরও বিশ্বজুড়ে সুইস মেডের সুনাম ভাঙিয়ে নকল সুইস ঘড়ির বিক্রিও নেহায়াত কম নয়। তবে, সুইজ্যাল্যান্ডের নামে চললেও এসব ঘড়ির বেশিরভাগ যন্ত্রাংশই আসে বিভিন্ন দেশ থেকে। এসব ছোট ছোট যন্ত্রাংশে সুইস প্রযুক্তির মিশেলে তৈরি হয় সেরা ব্র্যান্ডের ঘড়ি। শুধু সুইস কারখানায় তৈরি বলেই ৬০ শতাংশ মূল্য সংযোজিত হয় প্রায় প্রতিটি ঘড়িতে।
প্রচলিত ঘড়ির বাজারে প্রায় অপ্রতিদ্বন্দ্বি বলা চলে সুইজারল্যান্ডকে। বছরে প্রায় ২২ মিলিয়ন ঘড়ি বিক্রি হয় দেশটিতে। আর বিশ্বব্যাপী ঘড়ি রপ্তানি করে আয় হয় ২১ বিলিয়ন ডলার।