করোনাকালেও বাংলাদেশে ব্যবসার প্রধান বাধা দুর্নীতি। দুর্নীতির কারণে ব্যবসায় খরচ বেড়ে যাচ্ছে। শতকরা ৮৮ শতাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে এই সমস্যায়।
অন্যদিকে, সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ এখনো পায়নি ক্ষতিগ্রস্ত ৫৫ শতাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এসব তথ্য উঠৈ এসেছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেম-এর জরিপে ।
দেশে করোনাকালের শুরুতে লকডাউনে থেমে যায় প্রায় সবকিছু। থমকে যায় অনেক কারখানা, বৈদেশিক বাণিজ্য। ৫ মাস পর ব্যবসা-বাণিজ্যের বর্তমান হাল জানতে জরিপ চালায় গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেম।
সানেমের গবেষণা বলছে, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে মূলধন সহায়তা দিতে সরকারি ঋণ সহযোগিতা পায়নি ৫৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠান।আর ১১ শতাংশ প্রতিষ্ঠান এই প্রণোদনা প্যাকেজের কথা জানেই না। ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ ঘাটতি, ঋণ দিতে ব্যাংকের গড়িমসিসহ নানা কারণে ছোটখাট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো রয়ে গেছে সরকারি সহযোগিতার বাইরে।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি আবুল কাশেম খান বলেন,'যে স্টিমুলেজ প্যাকেজ দেয়া হচ্ছে, সেটা ব্যাংকিং সেক্টরের সঙ্গে যাদের সম্পর্ক আছে তাদেরকে দেয়া হচ্ছে। তবে ব্যংকিং সেক্টরের বাইরে যারা আছেন তাদেরকে কিভাবে এই প্যাকেজের মধ্যে আনতে পারি সেটার একটি পলিসি এই প্যাকেজের মধ্যে থাকা উচিত।'
চট্টগ্রাম স্টক একচেঞ্জের চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম জানান, 'বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান যারা এই প্যাকেজ পেয়েছে তারা এর সুফল পেয়েছে। কিন্তু ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠান পায়নি করাণ এই সকল শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাঠামো এবং গঠণতন্ত্রে সে বিষয়গুলো উল্লেখ নেই।'
বন্দর ও কাস্টম সংক্রান্ত অসুবিধা এবং করোনাভাইরাস প্রতিরোধে অব্যবস্থাপনার কারণে ব্যবসায় বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে। তবে এসবের চাইতেও বড় সমস্যা এখন দুর্নীতি।মেট্রপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন,'দুর্নিতীর বিরুদ্ধে কিছু দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। আগে দুর্নিতীর লেভেল ওয়ানে ছিল এখন সেটা টুতে চলে গেছে কেন? জানেন? তারা বলছে এখন ব্যবসা কম। আপনারা তো আসেন না। আমাকে তো পুষিয়ে নিতে হবে।'
সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে দুর্নীতির অভিযোগ করে হতাশা প্রকাশ করলেন বাণিজ্যমন্ত্রী।বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন,'দুর্নিতীর কথা উঠেছে। জানি না কবে আমরা এই দুরারোগ্য ব্যাধী থেকে আমরা মুক্তি পাবো। আমাদের মানষিকতা কবে পরিবর্তন হবে জানি না। সেটা থেকে আমাদের বেরুতে হবে।'
করোনা পরবর্তী সময়ে বিদেশি বিনিয়াগে টানতে করসুবিধা আরো ব্যবসাবান্ধব করা দরকার বলেও মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।