করোনায় আক্রান্ত নারীর তুলনায় পুরুষের মৃত্যুহার বেশি। চীন, ইতালি, দক্ষিণ কোরিয়াসহ কয়েকটি দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতদের মধ্যে এই প্রবণতাই দেখা যায়।
তবে এর বৈজ্ঞানিক কোন ব্যাখ্যা দিতে না পারলেও অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস, চিকিৎসাসেবা না নেয়ার প্রবণতা, দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার মত বিষয়গুলো দায়ী হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
চীনে গত তিন মাসে করোনা আক্রান্ত পুরুষদের মধ্যে মৃত্যুর হার ২ দশমিক ৮ শতাংশ। আর আক্রান্ত নারীদের মধ্যে প্রাণ হারিয়েছে ১ দশমিক ৭ শতাংশ।
বর্তমানে করোনায় সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি যে ইতালিতে সেখানেও একই চিত্র। দেশটিতে সংক্রমিত পুরুষদের মৃত্যুর হার ৭ দশমিক ২ শতাংশ এবং আক্রান্ত নারীদের মৃত্যুর হার ৪ দশমিক এক শতাংশ।
অন্যদিকে, দক্ষিণ কোরিয়ায় আক্রান্তদের বেশিরভাগই নারী হলেও, মৃতদের মোট ৫৪ শতাংশই পুরুষ।
এর আগে, সার্স এবং মার্স ভাইরাসের প্রকোপের সময়ও পুরুষদের ওপর এসব ভাইরাসের প্রভাব বেশি পরতে দেখা যায়। এই প্রবণতার যৌক্তিক কোন ব্যাখ্যা দিতে না পারলেও পুরুষদেরই কিছু অভ্যাসগত কারণে এটি হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা।
অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার কারণে করোনাভাইরাসে পুরুষরা আক্রান্তের বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন বলে ধারণা করছেন গবেষকরা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, নারীদের তুলনায় ৫ গুণ বেশি মদ্যপান এবং ধূমপান করেন পুরুষরা।
এর ফলে উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের অসুখ ও ফুসফুস দুর্বল হয়ে যাওয়ার মত গুরুতর অসুখে ভোগেন তারা। আর অসুস্থ হলেও পুরুষদের মধ্যে চিকিৎসা সেবা নেয়ার প্রবণতাও কম।
নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাসের কারণে নারীরা কম ঝুঁকিতে থাকতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার কারণেও নারীরা তুলনামূলকভাবে কম ঝুঁকিতে।
এসবের পাশাপাশি নারী ও পুরুষের মধ্যে হরমোন ও জিনগত নানা পার্থক্যও এর জন্য দায়ী হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার বিকল্প নেই বলেই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।