কেন্দ্র সরকার ৫ অগাস্ট জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা তুলে নিয়ে এটিকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করে।
অগাস্ট মাসেই সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কায় জম্মু ও কাশ্মীরের পর্যটকদের রাজ্য ত্যাগ করতে বলা হয়। কেন্দ্র জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করে এটিকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করার প্রস্তুতি নিয়েছে। ওই ঘটনার দুই মাসেরও বেশি সময় পর, বৃহস্পতিবার এই সমস্ত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র।
“গভর্নর শ্রী সত্য পাল মালিক উপদেষ্টা এবং মুখ্য সচিবের সাথে আজ পরিস্থিতি সহ সুরক্ষাব্যবস্থা পর্যালোচনা করেছেন। রাজ্যপাল নির্দেশ দিয়েছেন যে, পর্যটকদের উপত্যকা ছেড়ে যাওয়ার অনুরোধ করে স্বরাষ্ট্র দফতর যে পরামর্শটি দিয়েছিল তাত্ক্ষণিকভাবেই তা তুলে নেওয়া হবে। ১০.১০.২০১৯ থেকে কার্যকর হবে এই নির্দেশটি,” জম্মু ও কাশ্মীর প্রশাসনের তথ্য বিভাগ টুইট করে এমনটাই জানিয়েছে।
কেন্দ্র সরকার ৫ অগাস্ট জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা তুলে নিয়ে এটিকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করে জানায় যে, এই পদক্ষেপের ফলে রাজ্যের মানুষ দেশের বাকি অংশের মতো একই সাংবিধানিক সুবিধা পাবেন এবং উন্নয়ন নিশ্চিত হবে।
যে কোনও বিরূপ প্রতিক্রিয়া রোধ করতে কেন্দ্র ব্যাপক নিরাপত্তার বিধিনিষেধ আরোপ করে এবং রাজনীতিবিদদের গ্রেপ্তার করে। অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হয় এবং ফোন ও ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। এই কয়েকটি নিষেধাজ্ঞা আস্তে আস্তে শিথিল করা হয়েছে, তবে কাশ্মীর উপত্যকার অধিকাংশ এলাকাতেই মোবাইল এবং ইন্টারনেট পরিষেবা এখনও মূলত অবরুদ্ধ।
এই পদক্ষেপের ঘোষণার আগে কর্তৃপক্ষ অমরনাথ যাত্রা তীর্থযাত্রায় ‘সন্ত্রাসী হামলার হুমকি' দিয়ে অবিলম্বে কাশ্মীর ছাড়ার নির্দেশ দেয়। অগাস্টের শুরুতেই বিমান ও বাসে করে কয়েক হাজার তীর্থযাত্রীকে ফেরত পাঠানো হয়।
রাজ্যপাল সত্য পাল মালিকও কেন্দ্রের কথারই পুনরাবৃত্তি করে বলেন যে, কর্তৃপক্ষ ধীরে ধীরে বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করছে জম্মু ও কাশ্মীর থেকে এবং এই অঞ্চলের ‘বেশিরভাগ জায়গায় সুরক্ষা সংক্রান্ত সমস্ত নিষেধাজ্ঞাগুলি তুলে নেওয়া হয়েছে'।
বিভিন্ন ভ্রমণ সংস্থার কর্মকর্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছিলেন যে, পর্যটকদের সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়ার কারণে তাঁদের ব্যবসা ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এবং তাঁদের আরও আশঙ্কা ছিল যে, কাশ্মীরের এই অস্থিরতার কারণে দীর্ঘকাল পর্যটকরা দূরে রইবেন ভূস্বর্গ থেকে।
সরকারি তথ্য অনুসারে, এ বছরের প্রথম সাত মাসে ৫ লক্ষেরও বেশি মানুষ কাশ্মীর উপত্যকা ভ্রমণে আসেন। এছাড়াও, সন্ত্রাসের সতর্কতার কারণে অমরনাথ যাত্রা বাতিল করার আগে জুলাইয়ে প্রায় ৩.৪ লক্ষ তীর্থযাত্রী উপত্যকায় গিয়েছিলেন। ৫ অগাস্টের পরে কাশ্মীর সফরে আসেন মাত্র ১৫০ জন বিদেশি পর্যটক।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি