কুষ্টিয়ার মিরপুরে ক্ষেতের পাশে মৌমাছি চাষের মাধ্যমে মধু উৎপাদনের ফলে সরিষার ফলন বাড়ছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে। এ কারণে কুষ্টিয়ার তামাকপ্রবণ মিরপুর উপজেলার কৃষকরা ধীরে ধীরে সরিষা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। আর এভাবে বছরে প্রায় ৭ থেকে ১০ টন মধু উৎপাদন করেন একজন মৌ চাষি।
কুষ্টিয়ার মিরপুরের শিক্ষিত বেকার যুবক আল মামুন। বেশ কয়েক বছর আগে মাত্র ২ হাজার ৬শ' টাকা নিয়ে সরিষা ক্ষেতের পাশে মৌমাছির বাক্স বসিয়ে মধু উৎপাদন শুরু করেন। তখন মিরপুর উপজেলার বেশিরভাগ জমিতে তামাক চাষ হতো। মধু উৎপাদন শুরু পর থেকে সরিষার ফলন বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি লক্ষ্য করেন কৃষকেরা। ধীরে ধীরে সরিষা চাষ বাড়াতে থাকেন। সেই সঙ্গে বাড়ে মামুনের মৌমাছি বাক্সের পরিমাণ।
মামুন সরিষা ক্ষেতে মধু উৎপাদনে সাফল্য পেয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে সরিষা, কুল, লিচু, কালোজিরাসহ বিভিন্ন ফুল থেকে মধু উৎপাদন শুরু করেছেন। বছরে প্রায় ৭ থেকে ১০ টন মধু উৎপাদন করে বাজারজাত করেন তিনি। দেশে বিক্রির পাশাপাশি ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতেও মধু রপ্তানি করেন।
মধুচাষি আল মামুন বলেন, আমরা এলাকার লোকজনকে বলে উদ্বুদ্ধ করি। তামাক চাষকে বর্জন করে এখানে নয়নাভিরাম সরিষার চাষে রুপান্তরিত করতে পেরেছি। একদিকে যেমন পুষ্টিকর মধু পাচ্ছি, আরেকদিকে ভোজ্য তেলও পাওয়া যাচ্ছে।
ফসলের ক্ষেতের পাশে মৌ-চাষ করলে ফুলের পরাগায়ণ বেড়ে যায় বলে সরিষাসহ অন্য ফসলের ফলন বেড়ে যায় বলে জানায় স্থানীয় কৃষি বিভাগ। এতে করে লাভবান হন কৃষকেরা।
মিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রমেশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, মৌ বাক্স স্থাপন করে সরিষা চাষ করলে পরাগায়ন ২০-২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবার মধুও পাওয়া যায়।
সরিষার উৎপাদন বাড়াতে ক্ষেতে মৌ-চাষের জন্য স্থানীয়দের আগ্রহী করে তুলতে নানা উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানান কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা।
কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক সুশান্ত কুমার প্রামানিক বলেন, আমরা মৌ চাষির সংখ্যা আরও বাড়ানোর চেষ্টা করছি। ব্যাংকের লোনের ব্যাপারে আমরা বলতে পারি। এসএমই লোন যদি কেউ চায় কৃষি ঋণ কমিটির যে সভা হয় সেখানে আমরা প্রস্তাবনা দিবো।
মধুর উৎপাদন বাড়ানো ও বাজারজাতকরণে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন মধুচাষি মামুন।