বিদেশে চিকিৎসার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আবেদনের ব্যাপারে আইন মন্ত্রণালয় আজ মতামত জানাবে। আজ সরকারি ছুটির কারণে আগামীকাল রবিবার (৯ মে) সকালে তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পৌঁছাবে।
শনিবার (৮ মে) দুপুরে ডিবিসি নিউজকে টেলিফোনে এ কথা জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। এসময় তিনি বলেন, 'আজকের মধ্যে আমি আমার মতামত দিয়ে দিবো। রবিবার সকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ফাইল পৌঁছে যাবে। তবে কয়টার সময় তা বলতে পারছি না।'
এদিকে, শুক্রবার (৭ মে) রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন বেগম জিয়ার অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে বলে জানান তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। তিনি জানান, খালেদা জিয়াকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে মেডিকেল বোর্ড। তার অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল রয়েছে তবে অধিকতর চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশ নেওয়া যেতে পারে। সরকার বিদেশে চিকিৎসার জন্য যাওয়ার অনুমতি দিলে পরে বিদেশে যাওয়ার মতো শারীরিক সক্ষমতা থাকবে কি না তা মেডিক্যাল বোর্ড বৈঠকে বসে সিদ্ধান্ত নিবেন। আমরা সরকারের অনুমতির অপেক্ষায় আছি।
এর আগে বিএনপি সূত্র জানায়, লন্ডনের একটি হাসপাতালে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে যুক্তরাজ্য সরকারের ইতিবাচক সাড়া পেয়েছে তার পরিবার। বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে ছাড়পত্র পাওয়া মাত্রই খালেদা জিয়ার পরিবার তাকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করবে। তবে, কোন হাসপাতালে খালেদা জিয়াকে ভর্তি করানো হবে বা তাকে সেখানে নিয়ে যেতে বিশেষ ফ্লাইট বা এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের প্রয়োজন হবে কি না সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করার অন্যতম শর্ত ছিল তিনি বিদেশ যেতে পারবেন না। তবে, করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তির পর তার পরিবার থেকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি চেয়ে আবেদন করলে, সহানুভূতির সাথে বিবেচনা করার কথা বলেন স্বরাষ্ট্র ও আইনমন্ত্রী। এর আগে, বৃহস্পতিবার (৬ মে) করোনা নেগেটিভ হয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া।
গত ২৭ এপ্রিল রাত ১০টার দিকে করোনা আক্রান্ত খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সিটি স্ক্যানসহ স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় তার। গত ১১ এপ্রিল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন ৭৫ বছর বয়সী খালেদা জিয়া।
দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে কারাগারে যেতে হয়। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে, গত বছরের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে, শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য তার সাজা স্থগিত করে। তারপর থেকে খালেদা জিয়া গুলশানে ভাড়া বাসা ফিরোজায় অবস্থান করছিলেন। এরমধ্যে দুই দফা তার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো হয়। সাজা স্থগিতের অন্যতম শর্ত, দেশেই থাকতে হবে খালেদা জিয়াকে; অংশ নিতে পারবেন না কোন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে।