জাতীয়, স্বাস্থ্য

জাবি’তে ল্যাব প্রস্তুত, সংক্রমণের ভয়ে শুরু হচ্ছেনা করোনা পরীক্ষা

শামীম আহমেদ

ডিবিসি নিউজ

শুক্রবার ২৬শে জুন ২০২০ ১০:৪৪:৪৭ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

দুটি আরটি-পিসিআর মেশিন থাকার পরও করোনা সংকটে কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ভয়ে একটি ল্যাব পুরোপুরি প্রস্তুত থাকার পরও কয়েকজন শিক্ষকের আপত্তির কারণে তা চালু করা যায়নি।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রে রয়েছে অত্যাধুনিক আরটি-পিসিআর মেশিন। কিন্তু বায়োসেফটি কেবিনেট, লোকবল আর আলাদা রুমের অভাবে তা দিয়ে করোনা শনাক্তের পরীক্ষা করা যাচ্ছে না।

কিন্তু প্রাণ রসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের ল্যাবটি করোনা শনাক্তের পরীক্ষার জন্য পুরোপুরি তৈরি রয়েছে। স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কাজ করতেও আগ্রহী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। সমন্বয় করা গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি ল্যাবে প্রতিদিন অন্তত চারশো করোনার নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগ অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ বলেন, 'আধুনিক যন্ত্রপাতি সেটা আছে, প্রয়োজনীয় যে জনবল সেটাও আছে। আমার বিভাগে পরীক্ষা এককভাবে করা সম্ভব। আমার বিভাগে গ্র্যাজুয়েট বায়োকেমিস্ট ও মলিক্যুলার বায়োলিজিস্টদের ভলান্টিয়ার হিসেবে নিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে আমরা দেশের জন্য কাজ করতে চেয়েছিলাম। আমরা এখনও প্রস্তুত।'

দেশে যখন করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষাগারের সংকট, সেখানে দুটি আরটিপিসিআর মেশিন থাকার পরও, কয়েকজন প্রভাবশালী শিক্ষকের বাধার মুখে করোনা নমুনা পরীক্ষা করা যাচ্ছে না জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. এ এ মামুন বলেন, 'শিক্ষকরা এখানে সপরিবারে বাস করেন। তারা যে আক্রান্ত হবেন না তার গ্যারান্টি চাইতে পারেন। এখানে টেস্ট করিনি তাই বলে ক্যাম্পাসে যে একজনেরও হয়নি তা না। ক্যাম্পাসে ৭-৮ জনের করোনা হয়েছে। কিন্তু আমরা যদি আগে থেকেই টেস্ট করতাম তাহলে তারা বলতো এই ৭-৮ জনের হতো না, যদি না ওইখানে আমাদের টেস্ট না করা হতো। খালি প্রতিবাদটাই বেশি করতে চায় মানুষ।'

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ল্যাব থেকে ভাইরাস ছড়াবে এমন আশংঙ্কা ভিত্তিহীন। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টারের পরিচালক ডা. আবুল খায়ের মোহাম্মদ শামসুজ্জামান বলেন, 'সেরকম কোন সম্ভাবনা আসলে নাই। জৈব যে সুরক্ষা, জৈব যে নিরাপত্তা সেটা নিশ্চিত করেই কিন্তু পিসিআর ল্যাবে টেস্ট করানো হয়।'

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শাহেদুর রহমান জানান, 'আমরা যদি চিন্তা করি লম্বা সময় আমরা সাপোর্ট দিবো বা এই ধরনের মহামারি যেসব জীবাণু নিয়ে আসে, সেসব নিয়ে আমরা যদি রিসার্চ করতে চাই তাহলে একটা ডেটিকেটেড ল্যাবরেটরি তৈরী করা মনে হয় বাঞ্চনীয়।'

অবশ্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত করেও সেখানে করোনার সংক্রমণ ঠেকানো যায়নি। এ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের অন্তত ৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আর মারা গেছেন ১ জন।

আরও পড়ুন