দৃষ্টি প্রতিবন্ধী স্বামী আর দুই সন্তানের দায়িত্ব হঠাৎ করেই চেপে বসে রোজিনা বেগমের কাঁধে। দিশেহারা হয়ে পড়লেও জীবনযুদ্ধে হার মানতে নারাজ এই নারী শুরু করেন ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চালানো।
টাঙ্গাইল শহরে অটোরিকশা চালিয়ে একাই সংসারের হাল ধরে অন্যদের জন্য হয়ে উঠেছেন অনুপ্রেরণা।
সাত বছর আগে টাঙ্গাইলের কালীহাতির গোলরা গ্রামের দিনমজুর রফিকুল ইসলামের সাথে বিয়ে হয় রোজিনা বেগমের। কিন্তু দুই বছর আগে একচোখ অন্ধ স্বামীর অন্য চোখের আলোও ক্ষীণ হয়ে আসে। শেষ সম্বল ভিটেমাটি বিক্রি করে চিকিৎসা করানোর পরও দৃষ্টি শক্তি হারিয়ে অন্ধ হয়ে যান রফিকুল।
উপার্জনহীন স্বামী ও দুই সন্তানকে নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়লেও হাল ছাড়তে রাজি হননি রোজিনা। একটি বেসরকারি সংস্থার ঋণের টাকায় কেনা অটোরিকশা চালিয়ে শুরু করেন জীবন সংগ্রাম।
রোজিনা জানান, সংসারের হাল ধরতেই তিনি শহরে গাড়ি নিয়ে নামে পরেন। গ্রামের মানুষ তাকে নানান কথাই বলেছে। তবে তিনি কারো কথায় কান দেননি।
প্রথম দিকে সমালোচনার মুখে পড়লেও রোজিনার হার না মানা মানসিকতা অনেকের কাছেই এখন অনুপ্রেরণা। সাহসী এই জীবন যোদ্ধাকে সম্মান জানিয়ে তার দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে টাঙ্গাইল শহরের ট্রাফিক পুলিশ। ট্রাফিক সার্জেন্ট সুমন মিয়া জানান, রোজিনার অটো চলাচলে কখনো বাধা দেয়া হয়না।
অদম্য রোজিনা বেগমকে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিও। জেলার ফুলকি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বাবুল হোসেন জানান, সরকারিভাবে রজিনাকে সাহায্য করা যায় কিনা সে বিষয়টি দেখছেন তিনি।