জাতীয়, শিক্ষা

তিন পাকিস্তানি শাসককে ঢাবির দেয়া ডিগ্রি প্রত্যাহার হয়নি

Kamrul Islam Rubel

ডিবিসি নিউজ

শুক্রবার ৩রা জুলাই ২০২০ ১০:১৫:৩০ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

মুক্তিযুদ্ধের পাঁচ দশক অতিবাহিত হলেও তিন পাকিস্তানি শাসককে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়া ডিগ্রি প্রত্যাহার হয়নি।

মুক্তিযুদ্ধের প্রায় পাঁচ দশক পেরিয়ে গেছে। তারপরও খাজা নাজিমুদ্দিন, ইস্কান্দর মির্জা ও আইয়ুব খানের মতো সামরিক শাসক এবং বাংলা ভাষা ও বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিরোধিতাকারীদের দেয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক 'ডক্টর অব লজ' ডিগ্রি প্রত্যাহার করা হয়নি। দ্রুত তাদের ডিগ্রি প্রত্যাহারের দাবি মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ও ইতিহাসবিদদের।

১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠার পর  থেকে এ পর্যন্ত  রাষ্ট্র ও সমাজে অসামান্য অবদান রাখা অনেক গুণীজনকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এ ডিগ্রি পাওয়া ৫২ জনের মধ্যে তিনজনের রয়েছে বাংলা ভাষা, বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও বাংলাদেশবিরোধী ভুমিকা।

১৯৪৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক 'ডক্টর অব ল' ডিগ্রি দেয়া হয় পাকিস্তানের সাবেক গর্ভনর জেনারেল খাজা নাজিমুদ্দিনকে। ১৯৫২ সালের ২৭ জানুয়ারি পল্টন ময়দানের এক জনসভায় তিনি ঘোষণা দেন, উর্দু এবং একমাত্র উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা।

আইয়ুব খান, খাজা নাজিমুদ্দিন এবং ইস্কান্দার মির্জার সম্মানসূচক ডিগ্রি অবিলম্বে প্রত্যাহার করা উচিত বলে মনে করেন ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন। তিনি বিষয়টি কালো অধ্যায় হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'এই কালো অধ্যায় হয়তো মুছে ফেলা যাবে না তবে বিবেকের দায় মেটানো দরকার।'

১৯৫৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সম্মানসূচক 'ডক্টর অব ল' ডিগ্রি দেয় পাকিস্তানের সামরিক শাসনের সূচনাকারী সাবেক গর্ভনর জেনারেল ও রাষ্ট্রপতি ইস্কান্দার মির্জাকে। সংবিধান বলবৎ হওয়ার মাত্র আড়াই বছরের মাথায় ১৯৫৮ সালের ৭ই অক্টোবর তিনি সংবিধান বাতিল ঘোষণা করেন।

একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, 'জাতিবরোধী বা বাংলাদেশ বিরোধী যারা তাদের ভুলটা সংশোধন করতে বাধা কোথায়। আমার মনে হয় এখন সময় এসেছে আমাদের সকলেরই সোচ্চার হওয়া উচিত।'

আরেক 'ডক্টর অব ল' পাওয়া ব্যক্তি হলেন পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আইয়ুব খান। ১৯৬৮ সালে তার ইন্ধনে বঙ্গবন্ধুসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের অভিযোগ এনে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা করা হয়।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান বলেন, 'সবই ইতিহাসের অংশ। তবে, যেকোনো কাজ করতে গেলে সবসময় ঘোষণা দিয়ে হয়না। তার জন্য যথাযথভাবে বিভিন্ন ফোরামের মাধ্যমে সকলের অংশগ্রহণ ও আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে হয়।'

মিয়ানমারে স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চিকে দেয়া সম্মাননা গত মার্চে প্রত্যাহার করেছে যুক্তরাজ্যের দ্য সিটি অব লন্ডন কর্পোরেশন। এ দৃষ্টান্ত অনুসরণে ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধসহ বাঙালির স্বাধীকার আন্দোলনের বিরোধীতাদের ঢাকা ব্শিবিদ্যালয়ের প্রদত্ত সমানসূচক ডক্টর অব লজ ডিগ্রি প্রতাহারের দাবি করছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

আরও পড়ুন