সালমান শাহের মৃত্যু নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের দেয়া প্রতিবেদন প্রত্যাখান।
পারিবারিক কলহের জেরে চিত্রনায়ক সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছিলেন, পিবিআইয়ের এমন তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছেন সালমান শাহর মামা আলমগীর কুমকুম। একইসঙ্গে সঠিক তদন্তেরও দাবি জানিয়েছেন তিনি।
প্রয়াত চিত্রনায়ক সালমান শাহ'র মামা আলমগীর কুমকুম পিবিআই'র দেয়া প্রতিবেদন প্রত্যাখান করে বলেন, 'আদালতকে আগ্রাহ্য করে পিবিআই কিভাবে এ হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন সবাইকে জানিয়ে দিল? আবুলের কাছে সালমান শাহের সুইসাইড নোট পাওয়ার বিষয়ে আলমগীর জানান, সালমান শাহ কি মারা যাওয়ার আগে আবুলকে ডেকে বলেছিল আমার পকেটে সুইসাইড নোট আছে এটা তোর কাছে রাখ। এছাড়া তদন্তে শাবনূরের সঙ্গে সালমান শাহের প্রেমের বিষয়টিকে আজগুবি কথা বলে আখ্যায়িত করেন তিনি। তবে, এ প্রতিবেদনের বিষয়ে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথাও জানান সালমান শাহের মামা আলমগীর কুমকুম।
২০১৬ সালে এ মৃত্যুর রহস্যের তদন্ত শুরু করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন। ৪৪ জনের জবানবন্দি নিয়ে অবশেষে ৬০০ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। আর সেটি জানাতে গিয়েই পিবিআই জানিয়েছে সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছেন, এটি কোনো হত্যাকাণ্ড নয়।
দীর্ঘ ২৪ বছর পর হলেও এই তদন্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে সালমান শাহ'র মৃত্যুর ঘটনার সুরাহা হলো বলেই মনে করছে পিবিআই।
সোমবার (২৪শে ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে সালমান শাহের মৃত্যু নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে পিবিআই। সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই প্রধান বনোজ কুমার জানান, '১৬৪ ধারায় ১০ জনের জবানবন্দি নিয়েছে পিবিআই। নতুন করে আলামত হিসেবে একটি ফ্যান জব্দ করেছে পিবিআই। সালমান শাহ এর গলায় অর্ধ চন্দ্রাকৃতির গাঢ় কালো রঙের দাগ পাওয়া গেছে। শরীরের কোথাও কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিলো না। এমনকি কোনো বিষক্রিয়ার চিহ্ন পাওয়া যায়নি।'
বনজ কুমার আরও বলেন, 'সালমানের এক বন্ধু (মো সুমিত রহমান) জবানবন্দিতে বলেন, সালমান ছিলেন অভিমানী। বন্ধুদের সঙ্গে ঝগড়া হলেও নিজের রক্ত দিয়ে চিঠে লিখতেন তিনি। মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করেও ওষুধ-স্যাভলন খেয়েছেন সালমান। নায়িকা শাবনূরের সঙ্গে অতিরিক্ত ঘনিষ্ঠতার কারণে তার পরিবারে অশান্তি ছিলো শুরু থেকেই। মারা যাবার দিন সালমান তার মামা আলমগীর মো. কুমকুমকে ফোনে তার স্ত্রীকে তালাক দেবার কথা জানান। চলচ্চিত্র অভিনেতা মো. আশরাফুল হক ডন জবানবন্দিতে সালমানের সঙ্গে তার মায়ের বনিবনা ছিলো না বলে জানান। আর, একজন কো আর্টিস্ট হিসেবে যেমন সম্পর্ক হওয়ার কথা, তেমনটাই ছিলো বলে পিবিআইকে জানায় শাবনূর। মূলত শাবনূরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা, স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হওয়া এবং মায়ের সঙ্গে নানা সময় বনিবনা না হওয়া, সব মিলিয়ে আত্মহত্যা করেছেন সালমান শাহ।