লালমনিরহাট ও পটুয়াখালীতে 'বিনা ঘুষে' ৫৮ জনের পুলিশে চাকরি
'বিনা ঘুষ' বা তদবিরে সরকারি চাকরি! বিষয়টি অনেকটা অবিশ্বাস্য মনে হলেও এমনটি হয়েছে। লালমনিরহাট ও পটুয়াখালীতে দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা ৫৮ জন পেয়েছেন পুলিশের চাকরি। সংশ্লিষ্টরা জানান, সব ধরনের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েই মেধাবীদের বেছে বেছে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
মায়ের কাছে দোয়া নেয়ার আবেগঘন এই মুহূর্ত কষ্টকে বিদায় জানানোর।
ভ্যান চালিয়ে সংসার সামলেছেন বাবা। মা করেন গৃহ পরিচারিকার কাজ। ছেলে পবিত্র কুমারের পুলিশ কন্সটেবল হওয়ার আনন্দ যে কতটা-তা ফুটে উঠেছে বাবা-মায়ের চোখেমুখে।
সন্তানকে অন্যের বাড়ি কাজ করে মানুষ করেছেন মা। তাই তার চোখে আজ আনন্দের অশ্রূ। বাবা জানালেন, তাদের পরিশ্রম আজ স্বার্থক হয়েছে। কষ্ট করে লেখাপড়া করে ঘুষ ছাড়া পুলিশের চাকুরি পাওয়ায় গর্বিত পবিত্র কুমার।
পবিত্র কুমারের মত হত দরিদ্র মেধাবী মাহমুদা। তিস্তায় হারিয়েছেন ভিটে। কোন রকম ঘুষ বা তদবির ছাড়া পেয়েছেন পুলিশের চাকরি।
মাহমুদা বলেন, ঘুষ ছাড়া পুলিশের চাকুরি পাওয়ায় তিনি গর্বিত। এখন তার কাজ হবে দেশের সেবা করা।
নিয়োগে অনিয়ম ঠেকাতে প্রথম থেকেই তৎপর ছিল জেলা পুলিশ। শতভাগ স্বচ্ছতার মাধ্যমে শারীরিক যোগ্যতা সম্পন্ন ও মেধাবী ২৬ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে, জানান পুলিশ সুপার।
লালমনিরহাট জেলা পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা, যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। কারো কোন তদবির বা পরিচয়ে নিয়োগ দেয়া হয়নি।
পটুয়াখালীতেও ৩২ জন পুলিশ সদস্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। যাদের প্রায় সবাই দিনমজুর, রঙমিস্ত্রী কিংবা রিকশা চালিয়ে সংসার চালানো হতদরিদ্র পরিবারের।
পুলিশ সুপার জানান, এই জেলায় এবার ৫ হাজারের বেশি আবেদন পড়েছিল। যার মধ্যে ১ হাজার ২৮০ জনের শারীরিক স্বক্ষমতা যাছাই করে, ৩শ ২৫ জনের লিখিত পরীক্ষা ও ভাইভা শেষে ৩২ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ বলেন, যারা যোগ্য শুধু তারাই নির্বাচিত হয়েছেন। এক্ষেত্রে তাদের কোন ঘুষ বা আর্থিক অনিয়ম করতে হয়নি।
‘মুজিব বর্ষের অঙ্গিকার পুলিশ হবে জনতার’ শ্লোগানকে বাস্তবে রূপ দিতে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এই পদ্ধতির প্রবর্তন-জানান সংশ্লিষ্টরা।