কয়েকবছর ধরেই বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে বিশ্ব মেডিটেশন দিবস। সচেতনতা বৃদ্ধির কারণে ক্রমশ মানুষের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ধ্যান। এবছরও বেশ কয়েকটি সংগঠনের উদ্যোগে রাজধানীসহ সারাদেশে পালিত হচ্ছে দিবসটি।
মনের ব্যায়ামকে বলা হয় ধ্যান বা মেডিটেশন। একাগ্র মানসিক অনুশীলন বাড়ায় মনোযোগ, সচেতনতা ও সৃজনশীলতা। মানসিক স্বেচ্ছানিয়ন্ত্রণ মানুষের জীবনে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরিতে সহায়তা করে। আধুনিক যান্ত্রিক জীবনে যা বয়ে আনে প্রশান্তি ও মুক্তি।
মেডিটেশনের মাধ্যমে হওয়া যায় আত্মনিমগ্ন। গভীর আত্মনিমগ্নতা ভেতর থেকে জাগিয়ে তোলে আত্মশক্তি। আর অন্তরের এই জাগরণই বদলে দেয় জীবনের বাকি সবকিছু। তাই ধীরে ধীরে বিশ্বের সবখানেই জনপ্রিয় হচ্ছে আত্মউন্নয়নের এই পদ্ধতি।
খ্রিস্টপূর্ব প্রায় ৫০০০ বছর আগে ভারতের কিছু দেয়ালচিত্র দেখে বোঝা যায় প্রাচীন যুগে ধ্যানচর্চার প্রচলন ছিল। মেডিটেশনের আরো কিছু নিদর্শন পাওয়া যায় মহেঞ্জোদারো সভ্যতার ধ্বংসাবশেষে। ধ্যানের আদি ইতিহাস মুলত ভারত ও চীনের হলেও বিংশ শতাব্দীতে পাশ্চাত্যে মেডিটেশন নিয়ে গবেষণা এবং তাদের প্রচার মাধ্যমের কল্যাণে এর ব্যবহারিক শিক্ষা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে সারা বিশ্বে।
মেডিটেশনের আদি ইতিহাস এবং বর্তমান অবস্থা লক্ষ্য করলে একটি পার্থ্যক্য চোখে পড়ে। শুরুতে এশীয় অঞ্চলে যেখানে ধ্যানে সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্য পাবার বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে, সেখানে বর্তমান পশ্চিমা বিশ্বে ধ্যানের মাধ্যমে শারীরিক, মানসিক ও স্বাস্থ্যগত উপকারিতা এবং বৈষয়িক সাফল্য পাবার বিষয়টিই মূল।
১৯৩৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম মেডিটেশনের ওপর বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়। ২০২১ সালের এক জরিপে দেখা গেছে , সারা বিশ্বে প্রায় ৫০ কোটি মানুষ সক্রিয়ভাবে মেডিটৈশন করেন। গেল দশ বছরে মেডিটেশন করা শিশু কিশোরের সংখ্যা বেড়েছে ১০ গুণ। প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অ্যাপলের পরিসংখ্যান অনুযায়ী 'হেডস্প্যাস'(headspace) নামের অ্যাপটি ডাউনলোড করা হয়েছে প্রায় ৪০ কোটিবার।
বাংলাদেশে মেডিটেশন দিবস পালনের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন। ধ্যান দিবসের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরতে আয়োজন করতে যাচ্ছে নানা অনুষ্ঠান।