হাঁটতে বের হওয়া বয়স্ক ব্যক্তি ও রিকশা আরোহীদের পুলিশ পরিচয়ে থামিয়ে ছিনিয়ে নেয় টাকা, স্বর্ণালঙ্কারসহ মূল্যবান জিনিস। পাঁচ বছরে চক্রটি দেড় হাজারের বেশি ছিনতাই করেছে।
প্রতিদিন ভোর চারটায় শুরু হয় অপারেশন। শেষ হয় সকাল আটটায়। রাজধানীতে প্রাইভেটকার নিয়ে এই চার ঘণ্টায় শিকারের খোঁজ করতে থাকে পাঁচ সদস্যের ছিনতাইকারী চক্র। হাঁটতে বের হওয়া বয়স্ক ব্যক্তি ও রিকশা আরোহীদের পুলিশ পরিচয়ে থামিয়ে ছিনিয়ে নেয় টাকা, স্বর্ণালঙ্কারসহ মূল্যবান জিনিস। এই চক্রের সবাইকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ জানিয়েছে, পাঁচ বছরে দেড় হাজারের বেশি ছিনতাই করেছে তারা।
২৭শে সেপ্টেম্বর, সকাল পৌনে ৭টা। রাজধানীর আদাবরের একটি সড়কে এসে থামে একটি প্রাইভেটকার। কিছুক্ষণ পর গাড়ি থেকে নামে দু'জন। খুঁজতে থাকে শিকার। ফাঁকা সড়কে হাঁটছেন বয়স্ক নারী। তাকে অনুসরণ করছে একজন। এক পর্যায়ে পুলিশ পরিচয়ে ওই নারীকে থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকে সে। এক পর্যায়ে সাড়ে তিন ভরি ওজনের স্বর্ণের বালা ও হার ছিনিয়ে নিয়ে গাড়িতে উঠে সটকে পড়ে ছিনতাইকারীরা।
ভুক্তভোগী নারী আরতি রানী বনিক জানান, রাতে জঙ্গি হামলা হওয়ার পরও কেন বাসা থেকে বের হয়েছেন- পুলিশ পরিচয়ে এই প্রশ্ন করার পরই ছিনতাইয়ের শিকার হন তিনি।
আদাবর থানায় মামলা হলে সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত গাড়িটিকে খুঁজে বের করে জব্দ করে পুলিশ। সূত্র ধরে শনাক্ত করা হয় ছিনতাইকারীদের। পরে রাজধানীর ডেমরা ও কদমতলীতে অভিযানে ধরা পড়ে চক্রের পাঁচজনই। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে গলিত স্বর্ণ, ওয়াকিটকি ও হ্যান্ডকাফ।
পুলিশ জানিয়েছে, পথচারী সেজে টার্গেট ঠিক করে সুমন। পুলিশ কর্মকর্তা সেজে ছিনতাই করে শওকত ও রাশেদ। গাড়ি চালায় মাসুম। আর ছিতাইয়ের জিনিস বিক্রির দায়িত্ব বিল্লালের। পাঁচ বছরে দেড় হাজারের বেশি ছিনতাই করার কথা স্বীকার করেছে আসামিরা। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই রয়েছে একাধিক মামলা। ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার মো. শহিদুল্লাহ জানান, চক্রটি প্রতিদিন পাঁচ-ছয়টি ছিনতাই করতো।
রাজধানী ছাড়াও বিভিন্ন মহাসড়কেও মাঝেমধ্যে ছিনতাই করতো এ চক্রটি।