জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অপসারণের আন্দোলনে বাম ও প্রগতিশীল সংগঠনগুলো নেতৃত্বে থাকলেও অভিযোগ উঠেছে গোপনে এর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ছাত্রশিবির।
আন্দোলনকারীদের সঙ্গে শিবিরের কেন্দ্রীয় নেতাদের সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করছেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র ও ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় নেতা সাদ শরিফ। গ্রেপ্তার হওয়ার পর পুলিশের কাছে দেয়া তথ্য-উপাত্তে এসব খবর জানা গেছে।
দ্বিতীয় দফায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগের দাবিতে সক্রিয় কিছু শিক্ষক। সম্প্রতি উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে সোচ্চার হয় শিক্ষার্থীদের একাংশ। শিক্ষকরা প্রথম দিকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানানোর কথা বললেও মূলত এ আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারাই।
অভিযোগ উঠেছে, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনে অনুপ্রবেশকারী শিবির কর্মীরাই কলকাঠি নাড়ছেন উপাচার্য বিরোধী আন্দোলনে। এদের মধ্যে অন্যতম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি আশিকুর রহমান। হোয়াটস অ্যাপে যার আইডি স্বপ্নীল নামে।
সম্প্রতি উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে করা মশাল মিছিল থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়েরই সাবেক ছাত্র ও ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় নেতা সাদ শরিফকে। হোয়াটস অ্যাপে সাদের সঙ্গে আশিকুরের একাধিক আলাপচারিতার প্রমাণ পায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির দুই শীর্ষ নেতার সঙ্গেও সাদ শরিফের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের তথ্য মেলে হোয়াটস অ্যাপে। উপাচার্য বিরোধী আন্দোলনকে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করতে অধ্যাপক আনু মোহাম্মদকে সামনে আনারও পরিকল্পনা করে তারা।
গ্রেপ্তার হওয়া সাদ শরিফের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য-উপাত্তে দেখা যায়, ক্যাম্পাসের ৮ জন সাংবাদিক ছাড়াও এই শিবির নেতা নিয়ন্ত্রণ করতেন বিএনসিসি, সাইন্স ক্লাব, বিতর্ক মঞ্চ, ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এবং সরকার ও রাজনীতি বিতর্ক মঞ্চের শীর্ষ নেতাদের।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসা অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি অশান্ত করতে বিভিন্ন উষ্কানী দিচ্ছেন আন্দোলনকারীরা। আর এসবের পেছনে জামাত শিবিরের হাত থাকা অস্বাভাবিক নয়।
উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনে থাকা শিক্ষকরা বলছেন, শিবির ট্যাগ লাগিয়ে আন্দোলনকে বিতর্কিত করতেই এসব অভিযোগ তোলা হচ্ছে।
আন্দোলনে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ কম থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের সকলেই এর সঙ্গে আছেন বলেও দাবি শিক্ষকদের।