আবারও পরিবর্তন আসছে দেশের মাধ্যমিক শিক্ষার পাঠ্যক্রমে।
পরীক্ষায় ভালো ফলের নামে অশুভ প্রতিযোগিতা আর মুখস্থ বিদ্যার কবলে হাবুডুবু খাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। এমন বাস্তবতা থেকে বেরিয়ে এসে শিক্ষার্থীদের মেধার বিকাশে আবারো পরিবর্তন আসছে দেশের মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থার শিক্ষণ পদ্ধতিতে। এবার প্রচলিত ধারার বাইরে এসে নাচ-গান-চিত্রাঙ্কনের মাধ্যমে লেখাপড়া করবে শিক্ষার্থীরা। নির্দিষ্ট বিষয়কে প্রকল্প আকারে নিয়ে গ্রুপভিত্তিক সংশ্লিষ্ট বিষয়টির খুঁটিনাটি রপ্ত করে রীতিমত গবেষণা করবে তারা। নতুন এ পদ্ধতির নাম প্রজেক্ট বেইজড লার্নিং-পিবিএল। এরই মধ্যে লালমনিরহাটে পিবিএল পদ্ধতি প্রয়োগের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
শিক্ষকরা বলছেন, চাপিয়ে দেয়া নয়, আনন্দের সাথে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা গ্রহপণ করবে; শিক্ষার উদ্দেশ্য এমন হওয়া উচিৎ।
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (লালমনিরহাট) সভাপতি খুরশীদুজ্জামান আহমেদ বলেন, "পিবিএল করলে শিক্ষার্থীদের বেশি করে তথ্য সংগ্রহ করতে হয় এবং সক্রিয় থাকতে হয়- ফলে তাদের এই জ্ঞানটা দীর্ঘস্থায়ী হয়।"
সম্প্রতি লালমনিরহাটে 'প্রতিশ্রুতিশীল শিক্ষক সমাজ' নামে একটি সংগঠন ১২টি স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে স্বপ্নসত্যি মেলা আয়োজন করে পিবিএল পদ্ধতি চালু করে। করোনাকালে নতুন পদ্ধতিতে বাড়তি সুযোগ পেয়ে নিজেদের এগিয়ে নিচ্ছে শিক্ষার্থীরাও।
শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, এই শিক্ষা তারা বাস্তব জীবনের অনেক ক্ষেত্রেই কাজে লাগাতে পারবেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের জ্ঞান, দক্ষতা, বিশ্বাস, অভ্যাস, নৈতিকতা ও শিক্ষার মানকে আরো উন্নত করবে।
লালমনিরহাট জেলা শিক্ষা অফিসের গবেষণা কর্মকর্তা আবু হুরায়রা বলেন, "আমাদের প্রচলিত শিক্ষা-শিক্ষাদান পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা উচিৎ। এই পিবিএল যদি আমরা বাস্তবায়ন করতে পারি তবে সত্যিই আমরা সেই পরিবর্তিত শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে পরিচিত হতে পারবো।"
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, "বইমুখী শিক্ষার চেয়ে তারা বাস্তব জ্ঞান-বুদ্ধি বেশি পাবে। তাদের জীবনে এটা কাজে আসবে এবং শিক্ষাটা আনন্দদায়ক হবে।"
উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা লাভের সাথে সাথে শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে বাংলাদেশ আরো এক ধাপ এগিয়ে যাবে এমন স্বপ্ন পিবিএল সংশ্লিষ্টদের।