জেলার সংবাদ, অপরাধ, বিশেষ প্রতিবেদন

মৃত ব্যক্তির নামে কোটি টাকার সার উত্তোলন

আকরাম হোসেন

ডিবিসি নিউজ

মঙ্গলবার ২৭শে জুলাই ২০২১ ১০:২৮:১৬ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

চট্টগ্রামের পটিয়ার বাসিন্দা সারের ডিলার আব্দুল ছবুর মারা গেছেন ১০ বছর আগে। কিন্তু তার নামে বা তার সই জাল করে নিয়মিত তোলা হচ্ছিল সার।

অভিযোগ রয়েছে, কারখানা ও কৃষি কর্মকর্তাদের যোগসাজশে গেল ১০ বছর ধরে রাষ্ট্রায়ত্ত তিনটি সার কারখানা থেকে সার উত্তোলন করা হচ্ছে। ঘটনার প্রতিকার চাওয়ায় উল্টো মৃত ডিলার ছবুরের ছেলে মামলার আসামি হয়ে এখন কারাগারে। ঘটনা তদন্তে কাজ শুরু করেছে সিআইডি।  

ছবুর এন্ড ব্রাদার্সের মালিক আবদুল ছবুর মারা যান ২০১১ সালে। তারপরেও তার নামে ও তার স্বাক্ষরিত মনোনীতপত্রের মাধ্যমে লাইসেন্সটি দিয়ে তোলা হচ্ছে সার।
এভাবেই ফটিকছড়ির বক্তপুর ইউনিয়নের ডিলার হিসেবে তার লাইসেন্সের বিপরীতে গেল ১০ বছর ধরে প্রতি মাসেই তোলা হচ্ছিল সার।  

ঘটনা জানার পর গত বছরের ১১ই অক্টোবর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগে করেন মৃত ছবুরের ছেলে ইসহাক মিয়া।

অভিযোগে বলা হয়, সাদাত শামীম, তার ম্যানেজার আজগর ও মুনির সই জাল করে তার বাবা ছবুর মিয়ার নামে সার তুলছিলেন। কিন্তু অভিযোগ আমলে না নিয়ে উল্টো ইসহাককে প্রধান আসামি করে মামলা করেন থানা কৃষি কর্মকর্তা। বাদ দেয়া হয় শামীম ও মুনিরকে। 

ভুক্তভোগী ইসহাকের আইনজীবী এ এইচ এম জিয়াউদ্দিন বলেন, প্রশ্নটা উঠেছে কিভাবে তিনি মারা যাওয়ার পরও তার নামে সার তোলা হয়। একটা চক্র এই কাজ করছে। আমরা চাই এটির সঠিক তদন্ত হোক এবং কোন নিরীহ মানুষ যাতে এ মামলায় জড়িত না হয়।

প্রতি বছর লাইসেন্স নবায়নে ডিলারের উপস্থিতি ও সার উত্তোলনের সময় ডিলারের নমুনা সাক্ষর দেয়া বাধ্যতামূলক। এসব দেখার দায়িত্ব থানা কৃষি কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের। 

ফটিকছড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লিটন দেবনাথ বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে একটি তদন্ত করে হয়েছে। এখন এটি নিয়ে একটা মামলা হয়েছে। মামলাধীন বিষয় নিয়ে আমরা কথা বলতে পারি না।

মাঝিরঘাট কেন্দ্রিক একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে জড়িত সার পাচারের সাথে। মিয়ানমারে বাংলাদেশি সারের ব্যাপক চাহিদা থাকায় অনেক ডিলারের বিরুদ্ধে সার উত্তোলন করে তা পাচারের অভিযোগ রয়েছে। 

সিআইডি'র বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ খালেদ বলেন, আমরা মামলাটি তদন্ত করছি। তদন্ত শেষে এই ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে আমরা চার্জশীট দিব।

প্রতি বছর একজন ডিলারকে গড়ে এক কোটি টাকার অধিক সার সরবরাহ দেয়া হয়। সেই হিসেবে সাক্ষর জাল করে উত্তোলন করা সারের মূল্য ১০ কোটি টাকার অধিক।

আরও পড়ুন