মেরামতের সময় স্মার্টফোন, ল্যাপটপ থেকে ছবি ও ভিডিও চুরি, ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে অর্থ।
স্মার্টফোন, ল্যাপটপসহ বিভিন্ন ডিভাইস থেকে ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও চুরি করে পর্নসাইটে বিক্রি করছে এক শ্রেণির মেরামতকারী। এরপর আপলোড লিঙ্ক ভুক্তভোগী ও তার পরিচিতজনের কাছে পাঠিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে হাতিয়ে নিচ্ছে অর্থ। সম্প্রতি বিদেশি দূতাবাসের এক নারী কর্মকর্তার অভিযোগে, এক ইলেকট্রনিক ডিভাইস মেরামতকারীকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য বেরিয়ে আসে।
সম্প্রতি হোয়াটসঅ্যাপে অপরিচিত নম্বর থেকে আসা একটি ওয়েবসাইট লিংক খুলতেই আঁতকে ওঠেন বিদেশি দূতাবাসের নারী কর্মকর্তা। পর্নসাইটে কলগার্ল হিসেবে দেখতে পান নিজের ছবি ও মোবাইল নম্বর। পরিচিতজনের নম্বরেও জমতে থাকে নারী কর্মকর্তার ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও। এরপর হঠাৎই অপরিচিত নম্বর থেকে দাবি করা হয় অর্থ।
ভুক্তভোগী নারী বলেন, সে একটা খারাপ ওয়েবসাইট তৈরি করে আমার ছবি এবং নাম্বার দিয়েছে। এছাড়া বাজে কিছু জিনিস লিখে আমার অফিসের লোকজন এবং আত্মীয় স্বজনদের সেগুলো পাঠিয়েছে। এগুলো নিয়ে আমি মানসিকভাবে খুবই খারাপ অবস্থায় আছি, আমি ঠিকমত কাজও করতে পারছি না। আমি নরমাল লাইফ লিড করতে পারছি না।
অভিযোগ পেয়ে প্রযুক্তির সহায়তায় অপরিচিত নম্বর থেকে লিংক পাঠানো সেই ব্যক্তিকে শনাক্ত করেন গোয়েন্দারা। রাজধানীর কলাবাগানে ইলেকট্রনিক ডিভাইস মেরামতের একটি দোকানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় তাকে। চঞ্চল সাহা নামের ওই মেরামতকারীর কাছে ল্যাপটপ ঠিক করতে দিয়েছিলেন বিদেশি দূতাবাসের ওই নারী কর্মকর্তা। এ সুযোগে ব্যক্তিগত ছবি, ভিডিও ও কন্টাক্ট লিস্ট থেকে ফোন নম্বর সরিয়ে রাখে সে।
গোয়েন্দা পুলিশ জানাচ্ছে, চুরি করা ছবি-ভিডিও বিভিন্ন পর্ণসাইটে বিক্রির পাশাপাশি ভুক্তভোগী ও তার পরিচিতজনের হোয়াটসঅ্যাপে আপলোড লিংক পাঠিয়ে টাকা দাবি করতো চঞ্চল।
ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের (সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম) উপ কমিশনার মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্ত ডিভাইস থেকে ব্যক্তিগত ছবি,ভিডিও সংগ্রহ করে নাম বেনামে হোয়াটস অ্যাপ আইডি খুলে ডিভাইস থেকে কন্টাক্ট লিস্ট নিয়ে ভুক্তভোগীদের পরিচিতদের কাছে পাঠিয়ে ব্ল্যাক মেইল করতো।
সাইবার অপরাধ থেকে রক্ষা পেতে স্মার্টফোন, ল্যাপটপের মতো ডিভাইসে স্পর্শকাতর কিছু না রাখার পরামর্শ পুলিশের।