ভারতের পশ্চিমবঙ্গে এক শিক্ষক এক বছরেরও বেশি সময় ধরে স্কুলের শিক্ষার্থীদের পথেই পড়াচ্ছেন। করোনাকালে যেন শিশুরা স্কুল থেকে ঝরে না পড়ে , সে কারণেই তার এমন উদ্যোগ। এতে খুশি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরাও।
পশ্চিম বর্ধমানের এক আদিবাসী গ্রামের শিশুরা এখন রাস্তাতেই ক্লাস করছে। কারণ স্কুল বন্ধ থাকায় তাদের শিক্ষক দ্বীপ নারায়ণ নায়েকগ্রামের রাস্তাকেই বানিয়ে নিয়েছেন ক্লাসরুম।
রাস্তার দুপাশের বাড়িঘরের দেয়ালে আঁকা হয়েছে ব্ল্যাকবোর্ড। যেখানে শিক্ষার্থীরা মনোযোগ দিয়েই ক্লাস করছে।
শিক্ষক দ্বী নারায়ণ বললেন, বিদ্যালয়ে যেতে না পেরেশিশুরা যাতে ঝরে না যায়, সে চেষ্টাই করছেন তিনি।
শিক্ষক দ্বীপ নারায়ণ নায়েক বলেন,'দীর্ঘদিন ধরে স্কুল বন্ধ থাকায় ওদের অনেককেই বিভিন্ন কাজে পাঠাচ্ছে বাবা মা। তাই আমি শুধু চেয়েছি ওদের পড়াশোনা যেন বন্ধ হয়। এখানে লেখাপড়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়গুলোও বাচ্চাদের শেখানো হচ্ছে।'
করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে এইসব পরামর্শ কাজে লাগবে বলেও মনে করেন তিনি। পড়াশোনার পাশাপাশি শিশুদের করানো হচ্ছে নানা ধরনের শরীরচর্চাও।
উচ্ছসিত শিশুরা বলছে, দ্বীপ স্যারের এই উদ্যোগে লাভবান হচ্ছে তারা। শিশুরা জানায়,'স্যার আমাদের বইখাতা ব্যাগ সব দেয়। স্কুলে আসলে ভীষণ ভালো লাগে আমাদের। প্রতিদিনই আসতে চাই। লকডাউনে আমাদের অনেক বন্ধুই স্কুল ছেড়ে দিতে চেয়েছিল। স্যারের জন্য তারা ফিরে এসেছে।'
অভিভাবক কিরণ তুরি বলেন,'প্রায় দেড় বছর ধরে দ্বীপ স্যার আমাদের ছেলেমেয়েদের পড়াচ্ছে। কতটা কৃতজ্ঞ তার প্রতি বলে বোঝাতে পারবো না।'
এক গবেষণা বলছে, মহামারির সময়ে ভারতের গ্রামাঞ্চলগুলোতে মাত্র ৮ শতাংশ শিক্ষার্থী অনলাইনে পড়াশোনা করতে পেরেছ । ৩৭ শতাংশ কোন ধরনের পড়াশোনারই সুয্গে পায়নি। এ পরিস্থিতিতে দ্বীপ নারায়ণের এ ধরনের উদ্যোগ নিঃসন্দেহে আশাব্যঞ্জক খবর।