যশোরে স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেছেন সরকারি এক নারী কর্মচারী।
সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি), তালাকের বিষয় গোপন রেখে শারীরিক সম্পর্ক বজায় রাখায় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা করেন ওই নারী। বিচারক মো. সাইফুদ্দীন হোসাইন অভিযোগটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন- পিবিআই-কে নির্দেশ দিয়েছেন।
অভিযুক্ত স্বামীর নাম আব্দুর রহমান। তিনি যশোর শহরের নাজির শংকরপুর সাদেক দারোগার মোড় এলাকার আব্দুল ওহাবের ছেলে।
মামলার বাদী অভিযোগে উল্লেখ করেন, তিনি সদর উপজেলার একটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে অফিস সহায়ক পদে কর্মরত। ২০০৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর আসামি আব্দুর রহমানের সাথে তার ইসলামি শরিয়ত মোতাবেক বিয়ে হয়। তাদের একটি ছেলেসন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে তাকে অমানুষিক নির্যাতন করতো স্বামী। কিন্তু ছেলের ভবিষ্যতের কথা ভেবে নির্যাতন সহ্য করে তিনি সংসার করতে থাকেন। আর স্বামীর চাহিদামতো যৌতুকের টাকা না দেয়ায় তাকে মারপিটের পর তাড়িয়ে দেয়। তার আশ্রয় জোটে বাপের বাড়িতে। দ্বিতীয় বিয়ে করেন আব্দুর রহমান। এরপর স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক নিরোধ আইনে ২০২০ সালে একটি মামলা করেন তিনি। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ওই মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে এসে স্ত্রীকে তালাক দেয়া হয়েছে বলে একটি তালাকের কপি আদালতে উপস্থাপন করে আব্দুর রহমান। ওই তালাকনামায় উল্লেখ করা হয় ২০১৩ সালের ২০ জানুয়ারি তাকে তালাক দেয়া হয়েছে। অথচ তালাকের কোনো নোটিস বাদীকে বা সংশ্লিষ্ট পৌরসভায় প্রদান করা হয়নি। তালাকনামা উপস্থাপনের পর ওইদিন বিকেল চারটার দিকে আব্দুর রহমানকে বাদীর বাবা শহরের খড়কির বাড়িতে ডেকে নেন। এ সময় তার কাছে তালাকের বিষয় জানতে চাওয়া হলে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, ২০১৮ সালের ২২ ডিসেম্বর, ২০১৯ সালের ১৬ জানুয়ারি ও ১৬ মার্চ বাদীকে চিকিৎসা করানোর জন্য ঢাকায় নিয়ে যান তার স্বামী আব্দুর রহমান। ওই সময় নয়াপল্টনে দি ক্যাপিটাল আবাসিক হোটেলে আব্দুর রহমান তার সাথে রাতযাপন করেছেন। এছাড়া ২০১৯ সালের ২৭ এপ্রিল ও ২৩ জুন ভারতে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। সেখানেও তার সাথে রাতযাপন করেন আব্দুর রহমান। ফলে 'ইচ্ছাকৃতভাবে তালাকনামা গোপন রেখে শারীরিক সম্পর্ক করা ধর্ষণের শামিল' উল্লেখ করে ন্যায়বিচার পেতে আদালতে এই মামলা করা হয়েছে।
জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পেশকার আব্দুল হালিম জানান, আজ স্বামীর বিরুদ্ধে তালাকের তথ্য গোপন করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের অভিযোগে এক নারী মামলা করেছেন। বিচারক মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পিবিআই-কে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।