জাতীয়, রাজনীতি

হেফাজতের কমিটিতে পদ পেলেন সাবেক শিবির সভাপতি

শাকির আহমেদ 

ডিবিসি নিউজ

শুক্রবার ২০শে নভেম্বর ২০২০ ০৯:০৪:৩৬ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

হেফাজতের নবগঠিত কমিটিতে বেশ ক'জন জামায়াত-শিবিরের সাবেক নেতা, জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠরাও আছে।

হেফাজত ইসলামের নবগঠিত কমিটির নেতৃত্বে এসেছেন বেশ কজন জামায়াত ও শিবিরের সাবেক নেতা। তাদের মধ্যে অন্যতম ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি আহমদ আবদুল কাদের। এছাড়া জঙ্গি সংগঠন হুজি ও লস্কর-ই-তৈয়্যবা ঘনিষ্ঠতার অভিযোগে একাধিকবার গ্রেপ্তার হওয়া বেশ কজনও রয়েছেন কমিটিতে।  তাদের কমিটিতে রাখা সংগঠনের আদর্শবিরোধী বলছেন হেফাজতের সাবেক নেতারা। যদিও হেফাজত বলছে, সংগঠনকে বিতর্কিত করতে এমন অভিযোগ তোলা হচ্ছে।

গত রবিবার কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ১৫১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়। যা হেফাজতের আরেকটি অংশ মানছে না।

কমিটিতে নায়েবে আমিরের পদ পেয়েছেন ১৯৮২ সালে ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি আহমদ আবদুল কাদের। এর আগে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা শিবিরের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। 

হেফাজতে ইসলামের সাবেক নায়েবে আমির মুফতি ওয়াক্কাস বলেন, আহমদ আবদুল কাদেরের মধ্যে যদি জামায়াত-শিবিরের আদর্শ থেকে থাকে তাহলে তাকে এই কমিটিতে রাখাটা উচিত হয়নি।

আহমদ আবদুল কাদের ১৯৮০-৮১ সালে শিবির সমর্থিত তাহের-কাদের পরিষদ থেকে ডাকসু নির্বাচনে জিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ছাত্রশিবিরের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও কখনো জামায়াতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হননি বলে দাবি করছেন তিনি।

সাবেক শিবির সভাপতি ও নায়েবে আমির আহমদ আবদুল কাদের বলেন, আমি শিবির করতাম কিন্তু জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম না। আমি শিবিরকে ছেয়েছিলাম জামায়াতের রাজনীতি থেকে মুক্ত রাখতে। আর এই অপরাধে আমাকে শিবিরের রাজনীতি ছাড়তে হয়েছে।

নবগঠিত কমিটিতে হেফাজতে ইসলামের শিক্ষা ও সংস্কৃতি সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন মুফতি হারুন ইজহার। ২০০৯ সালে মার্কিন দূতাবাস ও ভারতীয় হাইকমিশনে হামলার পরিকল্পনার অভিযোগে লস্কর-ই-তৈয়্যবার শীর্ষ কয়েকজন নেতার সাথে আটক হন তিনি। 

২০১৩ সালে হারুন ইজহারদের লালখান মাদ্রাসায় বিস্ফোরণ ঘটলে তিনজন নিহত হয়। ২০১০ সালে র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া হুজি আমির ইয়াহিয়া জানিয়েছিল লালখান মাদ্রাসায় হুজির আঞ্চলিক শাখা খোলা হয়েছে। ১৯৯৯ সালে কবি শামসুর রাহমানের ওপর হামলার অভিযোগে আটক হওয়া জঙ্গিরা জানায়, হারুনদের লালখান মাদ্রাসায় বসেই এ হামলার পরিকল্পনা করা হয়।

এ বিষয়ে হেফাজতে ইসলামের সাবেক নায়েবে আমির মুফতি ওয়াক্কাস বলেন, এই কথা আমিও শুনেছি। এমন বিতর্কিত লোক কিভাবে কমিটিতে রাখা হলো তা আমার জানা নেই। তাদের নিয়ে পথচলা আহমদ শফী এবং হেফাজতের নীতি বিরোধী।

হারুন ইজহারের বাবা ইজহারুল ইসলাম চৌধুরী আশির দশকে তালেবানদের পক্ষে জিহাদে অংশ নিতে আফগানিস্তানে যান। ২০১০ সালে হুজি সম্পৃক্ততার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

তবে হেফাজতে ইসলামের নেতারা মনে করেন, সংগঠনকে বিতর্কিত করতেই পদবঞ্চিত একটি মহল নব নির্বাচিত নেতাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলেছেন।

হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির আব্দুর রব ইউসুফী বলেন, আহমদ আবদুল কাদেরের বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে তিনি শিবির করতেন, এটা সত্য কথা। তবে পরী জামায়াতের সঙ্গে উনার বিরোধ হয়। উনি প্রায় ৪০ বছর থেকে হেফাজতের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এখন উনি কেনো কমিটিতে আছেন এ প্রশ্ন করাটা অবান্তর।

আরও পড়ুন