একটা সময় ছিল যখন কোনো দুর্গম প্রান্ত, যেখানে ডাকপিয়নরা পৌঁছতে পারতেন না, সেখানে বার্তা পাঠানোয় পায়রাই ছিল একমাত্র অবলম্বন। এর জন্য তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হতো। বার্তা পাঠানোর জন্য সেনাবাহিনীতেও পায়রাকে একটা যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হতো।

মনে করা হয় মিশরেই প্রথম চালু হয়েছিল পায়রা দিয়ে বার্তা পৌঁছানোর কাজ। ৩ হাজার বছর আগে এই পায়রাকে কাজে লাগানোর কাজ শুরু হয়েছিল বলে মনে করা হয়। পরবর্তীকালেও ভারতেও পায়রাকে বার্তাবাহক হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

আরও পড়ুন: মলত্যাগ করতে গিয়ে মৃত্যু হয় যাদের

কিন্তু কোনোদিন ভেবে দেখেছেন কাক, টিয়া, কাকতুয়ার মতো অনেক পাখিই তো আছে, যারা সহজে মানুষের আদব-কায়দা রপ্ত করতে পারে, কিন্তু তাদের এই কাজে ব্যবহার না করে কেন শুধু পায়রাকেই পত্রবাহক বা বার্তাবাহক হিসেবে ব্যবহার করা হতো? পায়রাকেই সর্বত্র এই কাজে লাগানোর কারণ ছিল তাদের সঠিক জায়গায় ঠিক উড়তে উড়তে পৌঁছে যাওয়ার ক্ষমতা।

এর পেছনে রয়েছে বৈজ্ঞানিক কারণও। আসলে পায়রা কখনও রাস্তা ভোলে না। কারণ, তাদের শরীরে রয়েছে জিপিএস সিস্টেমের মত ক্ষমতা। তা ছাড়া পাখিরা ম্যাগনেটোরিসেপশনের মাধ্যমে বুঝতে পারে তারা পৃথিবীর কোন জায়গায় আছে। গবেষকদের মতে, পায়রার শরীরে ৫৩ ধরনের বিশেষ কোষের একটি অংশ থাকে, যার কারণে সে কখনোই পথ ভোলে না।

আরও পড়ুন: ৭০ বছরেও দেখতে তরুণীর মতো যে গ্রামের নারীরা

এছাড়া পায়রার চোখে যে রেটিনা রয়েছে, তাতে এক বিশেষ ধরনের প্রোটিন রয়েছে, যা পায়রাকে দিক নির্দেশ ও পথ চিনতে সাহায্য করে। তাই কোনো জায়গা থেকে খাঁচায় করে অন্যত্র নিয়ে আসা হলেও সেখান থেকে ছেড়ে দেওয়ার পর পায়রা ঠিক চিনে নিতে পারে তাকে যেখান থেকে আনা হয়েছিল, এবং সেখানে ফিরে যেতে পারে। দাবি করা হয়, সূর্যের অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে পায়রা নাকি ঘরে ফেরার রাস্তা ঠিক খুঁজে নিতে পারে। 

শুধু রাস্তা চেনার ক্ষমতাই নয়, গতির জন্যও পায়রাকে পত্রবাহক হিসেবে কাজে লাগোনোর জন্য বেছে নেওয়া হতো। ঘণ্টায় ৮০-৯০ কিলোমিটার বেগে উড়তে পারে পায়রা। একদিনে হাজার কিলোমিটার পথ উড়ে যেতে পারে। শুধু তা-ই নয়, ছয় হাজার ফুট উচ্চতাতেও উড়তে পারে পায়রা।

সূত্র: News18 Bangla

ডিবিসি/রূপক